ঢাকা , রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতিতে যেতে না পারা কর্মীদের বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিসহ গ্রেফতার ৬০২ অবৈধ অভিবাসী প্রথম ধাপে ১৮ হাজার কর্মী নেয়ার আশ্বাস মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন ড. ইউনূস সিঙ্গাপুর থেকে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া প্রবেশ, আটক ২১ বাংলাদেশি মালয়েশিয়ায় সড়কে প্রাণ গেল বাংলাদেশির ৬ লাখ টাকাতেও মালয়েশিয়ায় পাঠাতে পারেননি, এখন সব পক্ষের টালবাহানা ! সেপ্টেম্বরে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে ২৪০ কোটি ডলার লেবাননে বাংলাদেশ দূতাবাসে কনস্যুলার সেবা বন্ধ দিল্লি, নিউইয়র্কসহ ৫ মিশনের রাষ্ট্রদূতকে দেশে ফেরার নির্দেশ

মানবপাচার মামলায় সাবেক মন্ত্রী ও বায়রা’র দুই পক্ষের শীর্ষ নেতারা আসামী

প্রবাস বার্তা ডেস্ক
  • আপডেটের সময় : ১০:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / 228

 

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে অনিয়মের মাধ্যমে ক‍‍র্মী পাঠানোর অভিযোগে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক ক‍‍র্মসংস্থানের সাবেক মন্ত্রী ইমরান আহমদসহ এক মামলায় আসামী হয়েছেন বায়রা’র বিবদমান দুই গ্রুপের দুই শী‍‍র্ষ নেতা। বায়রা’র সাবেক সভাপতি ও সিনিয়র ব্যবসায়ী মো. নূর আলী ও সাবেক মহাসচিব মো. রুহুল আমিন স্বপনসহ মামলাটিতে আসামীর তালিকায় রয়েছে ১০৩ জনের।

 

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারের ১০০ রিক্রুটিং এজেন্সির সিন্ডিকেটের অন্য ব্যবসায়ীরাও মামলার আসামী। আসামী করা হয়েছে মন্ত্রণালয়ের তখনকার সিনিয়র সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীনকেও। এছাড়া অজ্ঞাতনামা ৪০ থেকে ৫০ জনকে আসামী করা হয়েছে। ২০১২ সালের মানবপচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে রাজধানীর পল্টন মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন আফিয়া ওভারসীজ নামের রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক আলতাব খান। এস আই নাজমুল হাসানকে মামলা তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

 

মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন -সাবেক সংসদ সদস্য বেনজির আহমেদ, সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম হাজারী, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের স্ত্রী কাশ্মীরি কামাল ও মেয়ে নাফিসা কামালসহ ১০০ রিক্রুটিং এজেন্সির সিন্ডিকেটের অন্য ব্যবসায়ীরাও।

 

এর আগে ২০১৬ সালে মালয়েশিয়ার ১০ রিক্রুটিং এজেন্সির বহুল আলোচিত সিন্ডিকেটের সময় বায়রার সাবেক এই দুই শী‍‍র্ষ নেতা মো. নূর আলী ও মো. রুহুল আমিন স্বপন একসাথে শ্রমবাজারটির নিয়ন্ত্রণে ছিলেন৤ এরপর ২০১৮ সালে ১ সেপ্টেম্বর থেকে শ্রমবাজার বন্ধ হলে, দু’জনের সম্প‍‍র্কে ফাটল ধরে৤ এক প‍‍র্যায়ে তা চুড়ান্ত রিরোধীতায় রুপ নেয়৤

 

সবশেষ, ২০২১ সালের সমঝোতা স্মারক সইয়ের আগ প‍‍র্যন্ত দু’জনেই মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন বলে ব্যপক আলোচনা চলতে থাকে৤ প্রথমে মো. রুহুল আমিন স্বপনের নেতৃত্বে ২৫ টি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে ২০২২ সালের ৮ আগস্ট থেকে ক‍‍র্মী নেয়া শুরু করে মালয়েশিয়া৤ এর পর মো. নূর আলীর নেতৃত্বের গ্রুপসহ আরো ৭৫টি রিক্রুটিং এজেন্সি ও সরকারি প্রতিষ্ঠান বোয়েসেল মিলিয়ে মোট ১০১ টি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে ক‍‍র্মী পাঠানো হয় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে৤ ৩১ মে ২০২৪ প‍‍র্যন্ত বিদেশি ক‍‍র্মী নেয়ার পর, ব‍‍র্তমানে ক‍‍র্মী নিয়োগ স্থগিত রেখেছে মালয়েশিয়ার সরকার৤

 

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ”বিবাদীগণ একটি সংঘবদ্ধ মানবপাচার চক্র। তারা বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশীদার প্রবাসী ক‍‍র্মীদের বাংলাদেশ হতে বিদেশে চাকুরীর উদ্দেশ্যে গমনের জন্য সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট মাফিয়া চক্র গড়ে তোলেন এবং হাজার হাজার ক‍‍র্মীর নিকট হতে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ দেশ ও বিদেশে গড়ে তোলেন।”

 

এজাহারে আরো বলা হয়, ‘‘জনশক্তি রপ্তানিতে দুই হাজারের অধিক রিক্রুটিং এজেন্ট থাকা সত্ত্বেও মামলার আসামিরা ব্যবসায়ীদের মধ্যে বৈষম্য তৈরি করে জঘন্য অপরাধ করেছেন। এমতাবস্থায় দেশের প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হলে পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পারি যে আমার মতো আরও অনেক অসহায় ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মোট ২৪ হাজার কোটি টাকা মালয়েশিয়ার ম্যানপাওয়ার সিন্ডিকেট চক্রের মাধ্যমে পাচার হয়েছে।”

 

মামলার বাদী আরও উল্লেখ করেন, ‘‘পরস্পর যোগসাজশে তারা আমার সরলতার সুযোগে ভয়ভীতি ও বলপ্রয়োগ করে মানবপাচারের উদ্দেশ্যে আমার নিকট হতে জোরপূর্বক অতিরিক্ত চাঁদাস্বরূপ দেড় লাখ টাকা হারে ৮৪১ জনের নিকট হতে ১২ কোটি ৫৬ লাখ এক হাজার টাকা আদায় করেছে। এ ছাড়া তারা সংঘবদ্ধভাবে অন্যান্য ব্যবসায়ীর নিকট হতে প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা চাঁদা আদায় করেছে।”

শেয়ার করুন

মানবপাচার মামলায় সাবেক মন্ত্রী ও বায়রা’র দুই পক্ষের শীর্ষ নেতারা আসামী

আপডেটের সময় : ১০:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

 

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে অনিয়মের মাধ্যমে ক‍‍র্মী পাঠানোর অভিযোগে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক ক‍‍র্মসংস্থানের সাবেক মন্ত্রী ইমরান আহমদসহ এক মামলায় আসামী হয়েছেন বায়রা’র বিবদমান দুই গ্রুপের দুই শী‍‍র্ষ নেতা। বায়রা’র সাবেক সভাপতি ও সিনিয়র ব্যবসায়ী মো. নূর আলী ও সাবেক মহাসচিব মো. রুহুল আমিন স্বপনসহ মামলাটিতে আসামীর তালিকায় রয়েছে ১০৩ জনের।

 

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারের ১০০ রিক্রুটিং এজেন্সির সিন্ডিকেটের অন্য ব্যবসায়ীরাও মামলার আসামী। আসামী করা হয়েছে মন্ত্রণালয়ের তখনকার সিনিয়র সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীনকেও। এছাড়া অজ্ঞাতনামা ৪০ থেকে ৫০ জনকে আসামী করা হয়েছে। ২০১২ সালের মানবপচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে রাজধানীর পল্টন মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন আফিয়া ওভারসীজ নামের রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক আলতাব খান। এস আই নাজমুল হাসানকে মামলা তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

 

মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন -সাবেক সংসদ সদস্য বেনজির আহমেদ, সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম হাজারী, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের স্ত্রী কাশ্মীরি কামাল ও মেয়ে নাফিসা কামালসহ ১০০ রিক্রুটিং এজেন্সির সিন্ডিকেটের অন্য ব্যবসায়ীরাও।

 

এর আগে ২০১৬ সালে মালয়েশিয়ার ১০ রিক্রুটিং এজেন্সির বহুল আলোচিত সিন্ডিকেটের সময় বায়রার সাবেক এই দুই শী‍‍র্ষ নেতা মো. নূর আলী ও মো. রুহুল আমিন স্বপন একসাথে শ্রমবাজারটির নিয়ন্ত্রণে ছিলেন৤ এরপর ২০১৮ সালে ১ সেপ্টেম্বর থেকে শ্রমবাজার বন্ধ হলে, দু’জনের সম্প‍‍র্কে ফাটল ধরে৤ এক প‍‍র্যায়ে তা চুড়ান্ত রিরোধীতায় রুপ নেয়৤

 

সবশেষ, ২০২১ সালের সমঝোতা স্মারক সইয়ের আগ প‍‍র্যন্ত দু’জনেই মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন বলে ব্যপক আলোচনা চলতে থাকে৤ প্রথমে মো. রুহুল আমিন স্বপনের নেতৃত্বে ২৫ টি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে ২০২২ সালের ৮ আগস্ট থেকে ক‍‍র্মী নেয়া শুরু করে মালয়েশিয়া৤ এর পর মো. নূর আলীর নেতৃত্বের গ্রুপসহ আরো ৭৫টি রিক্রুটিং এজেন্সি ও সরকারি প্রতিষ্ঠান বোয়েসেল মিলিয়ে মোট ১০১ টি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে ক‍‍র্মী পাঠানো হয় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে৤ ৩১ মে ২০২৪ প‍‍র্যন্ত বিদেশি ক‍‍র্মী নেয়ার পর, ব‍‍র্তমানে ক‍‍র্মী নিয়োগ স্থগিত রেখেছে মালয়েশিয়ার সরকার৤

 

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ”বিবাদীগণ একটি সংঘবদ্ধ মানবপাচার চক্র। তারা বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশীদার প্রবাসী ক‍‍র্মীদের বাংলাদেশ হতে বিদেশে চাকুরীর উদ্দেশ্যে গমনের জন্য সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট মাফিয়া চক্র গড়ে তোলেন এবং হাজার হাজার ক‍‍র্মীর নিকট হতে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ দেশ ও বিদেশে গড়ে তোলেন।”

 

এজাহারে আরো বলা হয়, ‘‘জনশক্তি রপ্তানিতে দুই হাজারের অধিক রিক্রুটিং এজেন্ট থাকা সত্ত্বেও মামলার আসামিরা ব্যবসায়ীদের মধ্যে বৈষম্য তৈরি করে জঘন্য অপরাধ করেছেন। এমতাবস্থায় দেশের প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হলে পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পারি যে আমার মতো আরও অনেক অসহায় ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মোট ২৪ হাজার কোটি টাকা মালয়েশিয়ার ম্যানপাওয়ার সিন্ডিকেট চক্রের মাধ্যমে পাচার হয়েছে।”

 

মামলার বাদী আরও উল্লেখ করেন, ‘‘পরস্পর যোগসাজশে তারা আমার সরলতার সুযোগে ভয়ভীতি ও বলপ্রয়োগ করে মানবপাচারের উদ্দেশ্যে আমার নিকট হতে জোরপূর্বক অতিরিক্ত চাঁদাস্বরূপ দেড় লাখ টাকা হারে ৮৪১ জনের নিকট হতে ১২ কোটি ৫৬ লাখ এক হাজার টাকা আদায় করেছে। এ ছাড়া তারা সংঘবদ্ধভাবে অন্যান্য ব্যবসায়ীর নিকট হতে প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা চাঁদা আদায় করেছে।”