বৈধপথে দেশে রেমিট্যান্স পাঠাতে মালয়েশিয়া হাইকমিশনের আহবান
- আপডেটের সময় : ০৫:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই ২০২৪
- / 134
দেশে প্রবাসী আয় আসা গেল সপ্তাহে থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে। শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তা নিয়ন্ত্রণে ১৯ জুলাই শুক্রবার রাত থেকে কারফিউ জারি করে সরকার। এরপর গেল মঙ্গলবার পর্যন্ত ব্যাংক বন্ধ ছিল। ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় ব্যাংকের অনলাইন লেনদেনও বন্ধ ছিল। টানা পাঁচ দিন লেনদেন বন্ধ থাকার পর ২৪ জুলাই চালু হয় ব্যাংক। সেদিন সুইফট সিস্টেম বিচ্ছিন্ন থাকায় অনেক ব্যাংকে কোনো প্রবাসী আয়ের অর্থ আসেনি।
এর পর থেকেই কমে গেছে দেশে আশা প্রবাসী আয়। আর এবিষয়ে মালয়েশিয়ায় বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশিদেরকে বৈধ পথে দেশে রেমিট্যান্স পাঠাতে আহবান জানিয়ে সতর্ক বার্তা দিয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) মালয়েশিয়া হাইকমিশনের এক বিজ্ঞপ্তিতে এই সতর্ক বার্তা দিয়েছে।
সতর্ক বার্তায় হাইকমিশন জানিয়েছে, “অতি সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রচারণা বা প্রপাগান্ডা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বৈধ চ্যানেল তথা ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠানো অর্থই রেমিট্যান্স। অবৈধ চ্যানেলে অর্থ পাঠানো বেআইনি ও চরম ঝুঁকিপূর্ণ।”
বিজ্ঞপ্তিতে হাইকমিশন থেকে বলা হয়েছে, “কষ্টার্জিত অর্থ হুন্ডির মাধ্যমে দেশে পাঠাতে গিয়ে অনেকেই প্রতারক চক্রের পাল্লায় পড়ে সর্বস্ব হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে এবং হাইকমিশন এ সংক্রান্ত অভিযোগ প্রায়ই পেয়ে থাকে। এছাড়া, সম্প্রতি ডলার এবং টাকার বিনিময়মূল্য সমন্বয় করা এবং রেমিট্যান্সে প্রণোদনা থাকায় ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠালে আর্থিকভাবে অধিকতর লাভবান হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে।”
এছাড়া, “অবৈধ পথে অর্থ পাঠালে তা দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জিত অর্থসহ সার্বিকভাবে দেশের জন্য চরম ক্ষতিকর। যা বিদেশে অর্থপাচার, নাশকতা, মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রমে ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি করে। The Bangladesh Passport Order 1973 (বাংলাদেশ পাসপোর্ট আইন ১৯৭৩) অনুসারে “আমরা যারা বিদেশে অবস্থান করছি, তাদের দায়িত্ব রয়েছে কেবলমাত্র বৈধপথে অর্থ প্রেরণ করা।” এটা সম্মানিত পাসপোর্টধারীদের দেশের প্রতি পবিত্র দায়িত্ব। অধিকন্তু, মালয়েশিয়ার আইন অনুযায়ী হুন্ডি অবৈধ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।”
হাইকমিশন থেকে বলা হয়েছে, “মালয়েশিয়ায় বসবাসরত সম্মানিত প্রবাসীকে প্রচলিত সকল আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে এবং কোন প্রকার অপপ্রচার বা গুজবে কান না দিয়ে নিজের পরিবার তথা দেশ ও জাতির সার্বিক কল্যাণে তাদের কষ্টার্জিত অর্থ বৈধ পথে তথা ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠানোর জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।”
এছাড়া মালয়েশিয়া বাংলাদেশ আরো জানায়, “বাংলাদেশের টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নে মালয়েশিয়ায় বসবাসরত সম্মানিত প্রবাসীদের কষ্টার্জিত অর্থ বৈধ পথে বাংলাদেশে পাঠানোর প্রবণতা পূর্বের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে বিগত অর্থবছরে ৫ম শীর্ষ রেমিট্যান্স পাঠানো দেশ হিসেবে মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিমাণ ছিল ১.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।”
এছাড়া, সম্প্রতি বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ হাইকমিশন বাংলাদেশি প্রবাসীদের মালয়েশিয়ার আইনকানুন মেনে চলার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করে। প্রবাসী বাংলাদেশিরা হাইকমিশনের আহ্বানে স্বত:স্ফূর্তভাবে সাড়া দিয়ে মালয়েশিয়ার আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকায় হাইকমিশনের পক্ষ থেকে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানানো হয়েছে।