লিবিয়ায় দুই ভাইকে জিম্মি, মুক্তিপণ নিতে এসে গ্রেপ্তার ২

- আপডেটের সময় : ০৯:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ জুলাই ২০২৪
- / 255
চাকরি দেওয়ার নামে লিবিয়ায় নিয়ে দুই ভাইকে জিম্মি করে রেখে ছিল প্রতারক চক্র। পরে মুক্তিপণ আদায় করতে এসে বগুড়া জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) হাতে আটক হয়েছে প্রতারক চক্রের দুই সদস্য। মঙ্গলবার (২ জুলাই) গুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আকতার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানিয়েছেন।
পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আকতার জানিয়েছেন, চক্রের দুই সদস্যকে আটকের পর জিম্মি দুই ভাইকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। আর আটক দুজনের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে মুক্তিপণের জন্য নেওয়া এক লাখ টাকা। আটক দুজন হলো বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার শিহিপুর গ্রামের পান্নু মিয়া ও একই উপজেলার নওদাবগা গ্রামের শিপলু সরকার। পান্নুর ভাই লিবিয়া প্রবাসী পায়েল অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় চক্রের সক্রিয় সদস্য বলে জানিয়েছে প্রেস ব্রিফিংয়ে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, গেল ৮ জুন বগুড়ার দুপচাঁচিয়া থানায় মানব পাচার দমন ও প্রতিরোধ আইনে একটি মামলা করেন একই উপজেলার বাসিন্দা রাব্বী খন্দকার। তিনি অভিযোগ করেন, “তার দুই ভাই পাপ্পু খন্দকার ও সাঈদ খন্দকারকে ভালো বেতনে লিবিয়ায় চাকরি দেওয়া প্রলোভন দেখান উপজেলা সদরের বাসস্ট্যান্ড এলাকার মোন্তাহা স্টোরের স্বত্বাধিকারী উজ্জ্বল হোসেন।
পরে তার কথামতো ১১ লাখ টাকা দিয়ে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর পাপ্পু খন্দকারকে এবং চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি সাঈদ খন্দকারকে লিবিয়ায় পাঠানো হয়। লিবিয়ায় অবস্থানরত উজ্জ্বলের পূর্বপরিচিত সাব্বির হোসেন এই ভাইকে লিবিয়ার হাসপাতালে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার কথা ছিল। লিবিয়ায় পৌঁছার পর ওই দুই ভাইকে কোনো চাকরি না দিয়ে বসিয়ে রাখে সাব্বির। পরে চাকরির ব্যবস্থা হয়েছে বলে গেল ২৫ মার্চ তাদের দুই ভাইকে পৃথক দুই শহরে নিয়ে আটকে রাখে। এরপর তাদের মাধ্যমে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, ওই ঘটনায় ৮ জুন মামলা দায়েরের পরপরই ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে উজ্জ্বল হোসেন ও সফাত নামের দুজনকে আটক করে। তাদের আটকের পর সাঈদ খন্দকারকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। গত ২৩ জুন সাঈদকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। কিন্তু ওই চক্রের হাতে আটক অপর ভাইয়ের কোনো সন্ধান মিলছিল না।
সম্প্রতি অপহরণকারী চক্র পাপ্পু খন্দকারকে মুক্তি দিতে ৪ লাখ টাকা দাবি করে যোগাযোগ করে। এজন্য তারা ডাচ-বাংলা ব্যাংকের একটি অ্যাকাউন্ট নম্বর দেয়। বাদী ওই নম্বরে এক লাখ টাকা নেওয়ার পর অবশিষ্ট টাকা দিতে চাপ দেয় ওই চক্র। তখন পুলিশের পরামর্শে নগদ টাকা দিতে সম্মত হয় পাপ্পুর পরিবার।
আর গেল সোমবার সন্ধ্যায় সেই টাকা নিতে এলে পুলিশের হাতে আটক হয় সোনাতলা উপজেলার পান্নু ও শিপলু। তাদের মাধ্যমে যোগাযোগ করে পরে অপহৃত পাপ্পুকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয় বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।
তিনি বলেন, দ্রুতই পাপ্পু খন্দকারকে দেশে ফিরিয়ে নিতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া পাপ্পুর ভাইয়ের দায়ের করা মামলায় আটক পান্নু ও শিপলুকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আকতার।