লাগামহীন ভাড়ায় শেষ মুহূর্তে ভোগান্তি বেড়েছে মালয়েশিয়াগামী কর্মীদের
- আপডেটের সময় : ০৬:১৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ মে ২০২৪
- / 490
মালয়েশিয়া যেতে বাংলাদেশি নতুন কর্মীদের সময় শেষ হচ্ছে ৩১ মে। তাই এ সময়ের মধ্যে বেশি সংখ্যক বা প্রক্রিয়ায় থাকা সকল কর্মীকে মালয়েশিয়া পাঠাতে বেশি দামে টিকিট করতে বাধ্য হচ্ছে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো। কিন্তু কর্মীদের তাড়াহুড়ার সুযোগ নিয়ে অধিকাংশ উড়োজাহাজ প্রতিষ্ঠান বেশ চড়া দামে টিকিট বিক্রি করছে। ফলে টিকিটের জন্য কয়েকগুণ বেশি টাকা দিতে বাধ্য হচ্ছেন কর্মীরাও।
এতে করে বিপাকে পড়ছেন মালয়েশিয়ায় কর্মী ও তাদেরকে পাঠানো রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো। আবার এ সুযোগে মাঠ পর্যায়ে সাব-এজেন্ট বা মধ্যসত্ত্বভোগীরা কর্মীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে আরও বেশি টাকা। এমনকি অনেক কর্মীকে মালয়েশিয়া যেতে ৫ থেকে সাড়ে ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত দিতে হচ্ছে।
সাধারণত, ঢাকা থেকে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুর যেতে উড়োজাহাজের টিকিটের সর্বোচ্চ দাম থাকে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। চলতি মাসের শুরু থেকেই তা তিন গুণের বেশি হয়ে গেছে। মাসের মাঝামাঝি সময়ে এটি ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা হয়ে যায়।
কর্মীদের সুবিধার্থে দেশের একমাত্র সরকারি উড়োজাহাজ সংস্থা বাংলাদেশ বিমান বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করছে চারটি। আর এসব ফ্লাইটের টিকিট নিয়ে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। যেখানে দেখা গেছে প্রতি টিকিটের দাম প্রায় পাঁচ গুণ পর্যন্ত বেড়েছে। এমনকি বিমানের বিশেষ ফ্লাইটের টিকিটের দামও এক লাখ টাকা ছাড়িয়েছে।
জানা গেছে, বিমানের এমন টিকিট বাণিজ্য নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অভিযোগ করেছে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এর আগে, ২৬ মে (রবিবার) পাঠানো অভিযোগে বলা হয়, মালয়েশিয়া যেতে বিমানের ঘোষিত বিশেষ ফ্লাইটে সরাসরি টিকিট করতে পারছে না এজেন্সি। গ্লোবাল ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমে (জিডিএস) ফ্লাইটের টিকিট দেখাচ্ছে না। এ সুযোগে বিমানের কর্মকর্তারা দুর্নীতি করছেন। এতে টিকিটের দাম এক লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করে প্রতিষ্ঠানটি।
এদিকে, টিকিটের এমন দাম নিয়ে মালয়েশিয়াগামী কর্মীদের ও রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর মাঝে তৈরি হয়েছে অসন্তোষ। কারণ আগের চুক্তি অনুযায়ী কর্মীদের কাছ থেকে টাকা নিতে পারছে না রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো। আর বাড়তি টাকা চাইলেই সৃষ্টি হচ্ছে ঝামেলা। এতে করে চরম বিপাকে রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকরাও। আবার এ সুযোগে কিছু রিক্রুটিং এজেন্সি ও মধ্যসত্ত্বভোগীরা কর্মীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। আর মালয়েশিয়াগামী কর্মীরাও বাধ্য হচ্ছেন টাকা দিতে, যেহেতু সামনে সময় কম।
বাংলাদেশ বিমান সূত্র বলছে, মালয়েশিয়া থেকে ফেরার সময় খালি ফ্লাইট আসবে বলে বাড়তি দাম ধরা হয়েছে। বিশেষ ফ্লাইটের টিকিট ৬৮ হাজার থেকে শুরু করেছে বিমান। এটি সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। এটি অনলাইন থেকেও কেনার সুযোগ রাখা হয়েছিল। এ ছাড়া আরও চারটি বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনার জন্য গত রোববার মালয়েশিয়াকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মালয়েশিয়ার বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
২০১৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৪ বছর বন্ধ থাকার পর ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর মালয়েশিয়ার সাথে শ্রমবাজার সম্পর্কিত সমঝোতা স্মারক সই হয় এরপর ২ জুন ২০২২ ঢাকায় দু’দেশের যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক হয় মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী এম সারাভানান নিজেও অংশ নেন সেই বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন সেসময়ের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ সেদিনই শ্রমবাজার খোলার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয় প্রথমে ২৫ রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় মালয়েশিয়া এরপর দুই ধারে আরো ৭৫ রিক্রুটিং এজেন্সি বাড়িয়ে কর্মী পাঠানোর অনুমোদন দেয় দেশটি এছাড়া সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ওভারসীজ এমপ্লয়মেন্ট এন্ড সার্ভিসেস লিমিটেড- বোয়েসেল যুক্ত হয় তালিকায় ফলে মোট ১০১ রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী যাচ্ছে দেশটিতে এছাড়া প্রায় ২ হাজার রিক্রুটিং এজেন্সি মালয়েশিয়া থেকে ভিসা বা চাহিদাপত্র সংগ্রহ করছে এবং তারাই কর্মী সংগ্রহ করছে