সরকারি খরচে দেশে এসেছে মালয়েশিয়া প্রবাসী আব্দুস সোবহানের মরদেহ
- আপডেটের সময় : ০৬:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪
- / 180
সকল প্রক্রিয়া শেষে অবশেষে সরকারি খরচে দেশে এসেছে মালয়েশিয়া প্রবাসী আব্দুস সোবহানের মরদেহ। গেল রবিবার (১৯ মে) মালয়েশিয়ার স্থানীয় সময় সাড়ে ৩ টায় বাংলাদেশ বিমানের বিজি-৩৮৭ ফ্লাইটে দেশে পৌছায় আব্দুল সোবহানের মরদেহ। হযরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আব্দুল সোবহানের লাশ গ্রহণ করন করে তার ছেলে মো: সাগর।
চলতি বছরের ১৭ মার্চ চিকিৎসারত অবস্থায় তিনি মালয়েশিয়ার একটি হাসপাতালে মারা যান। মালয়েশিয়ার পেরাক রাজ্যের ইপোহ শহরের রাজা মনজিৎ সিং ইপোহ হাসপাতাল মর্গে প্রায় দুই মাস ধরে পড়েছিল তার মরদেহ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ হাইকমিশনকে মৃত্যুর খবর জানালে হাসপাতালে গিয়ে খোঁজ নেয় হাইকমিশন। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাতে লেখা একটি পাসপোর্ট ছাড়া নিহতের পরিচিত অন্য কারো কোনো তথ্য দিতে পারেনি। পাসপোর্ট অনুযায়ী, ওই বাংলাদেশির নাম মো. আবদুল সোবহান (৪৯)। তিনি কুমিল্লা জেলার নুর জামানের ছেলে।
হাইকমিশনের এক বিবৃতিতে জনসাধারণের সহযোগিতা চেয়ে বলা হয়েছিল, স্ট্রোকজনিত কারণে মো. আবদুল সোবহানকে ২০২২ সালে অপরিচিত এক ব্যক্তি হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন। মৃতের সময় হাতে লেখা পাসপোর্টে বিস্তারিত তথ্য না থাকায় এবং তার পরিবার ও স্বজনদের খুঁজে না পাওয়ায় মরদেহটি দেশে পাঠানো যাচ্ছে না বলে জানিয়েছিলো মালয়েশিয়া বাংলাদেশ হাইকমিশন।
প্রবাসী ওই বাংলাদেশির বিস্তারিত পরিচয় নিশ্চিতে প্রচেষ্টা চালায় বাংলাদেশ হাইকমিশন। মরদেহ শনাক্তে স্বজন বা অন্য পরিচিতজনদের হাইকমিশনে যোগাযোগ করতে বলা হয়।
পরবর্তীতে হাইকমিশন আব্দুল সোবহানের ব্যাগ খোঁজে কাগজের টুকরোয় এক মোবাইল নম্বর পায়। ঐ নাম্বারে হাই কমিশনের প্রথম সচিব(শ্রম) সুমন চন্দ্র দাশ কথা বলে জানতে পারেন তিনি তার মেয়ে। কিন্তু মেয়ে আব্দুল সোবহানের মরদেহ দেশে নিতে আগ্রহ না দেখিয়ে মোবাইল বন্ধ করে দেন। হাইকমিশন থেকে বারবার তার মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরেও সংযোগ পাওয়া যায় নি।
১৮ মে শনিবার, হাইকমিশনের প্রথম সচিব (শ্রম) সুমন চন্দ্র দাশ জানান, হাইকমিশনার মো: শামীম আহসানের নির্দেশনায় হাইকমিশন তার পরিবারের সাথে যোগাযোগের জন্য পুলিশের সহযোগিতায় মোবাইল নম্বরের রেজিস্ট্রেশনধারীর তথ্য সংগ্রহ করে। প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে হাইকমিশন নম্বরটি মৃতের মেয়ের বলে নিশ্চিত হওয়া যায়। পরবর্তীতে বিস্তারিত উল্লেখপূর্বক সহযোগিতা চেয়ে মন্ত্রণালয়ে পত্র প্রেরণ করা হয়। মন্ত্রণালয়ের তাৎক্ষণিক উদ্যোগে প্রতিবেদনের সূত্র ধরে মৃতের ছেলের সাথে যোগাযোগ করা হয়।
মৃতের ছেলে সাগর মন্ত্রণালয়ে উপস্থিত হয়ে পিতার মরদেহ আর্থিক দুরাবস্থার কথা জানিয়ে সরকারি খরচে লাশ দেশে নেয়ার আবেদন করেন। সাগরের আবেদনের পরে মন্ত্রণালয় ও হাইকমিশন প্রবাসী আব্দুল সোবহানের লাশ দেশে পাঠানোর সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। রবিবার মালয়েশিয়ার স্থানীয় সময় সাড়ে ৩ টায় বাংলাদেশ বিমানের বিজি-৩৮৭ ফ্লাইটে দেশে পাঠিয়েছে আব্দুল সোবহানের মরদেহ। হযরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আব্দুল সোবহানের লাশ গ্রহণ করে তার ছেলে মো: সাগর।
একটি অজ্ঞাত লাশ দেশে পাঠানোতে সরকার ও হাই কমিশনের দীর্ঘ সময় ধরে এমন ধারাবাহিক প্রচেষ্টার সফল সমাপ্তি সত্যিই প্রশংসনীয় এবং সংশ্লিষ্ট সকলে প্রশংসার দাবিদার বলে মালয়েশিয়ার সাধারণ প্রবাসীরা মনে করেন।