প্রবাসীদের সম্মানে এয়ারপোর্টে সুবিধা ও প্লট বরাদ্দের সুপারিশ: ইমরান আহমদ
- আপডেটের সময় : ০৮:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪
- / 335
প্রবাসীদের সম্মান দিতে এয়ারপোর্টে সুবিধা বাড়ানো এবং প্রবাসীদের জন্য প্লট বরাদ্দের সুপারিশ করেছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদ। তিনি বলেন, কর্মীদের সম্মান দেয়া ছাড়াও আরো অনেক সুযোগ সুবিধা দেয়ার আছে। প্রবাসীদের জন্য প্লট বরাদ্দ এবং কর্মীর সন্তানদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সহযোগিতা করার কথাও বলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২ মে ) রাজধানীর বারিধারার ন্যাসেন্ট গার্ডেনিয়া হোটেলে পার্লামেন্টারিয়ান্স ককার্স অন মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এবং ওয়্যারবি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ইমরান আহমদ বলেছেন, “এয়ারপোর্টে কর্মীদের জন্য চা কফির ব্যবস্থা করা যায়। একটা চা বা কফি ১০ টাকা করে, তাহলে একটা মেশিন দিয়ে দাও , তারা নিজেরা নিয়ে খাবে। যখন এয়ারপোর্টে দেখবে অন্য প্যাসেঞ্জাররা পাবেনা কিন্তু প্রবাসী কর্মীরা এই সেবা টুকু পাবে তখন তারা অনেক খুশি হবে যে ওকে আমরা এই সম্মান দিয়েছি”
তিনি আরো বলেছেন, “মন্ত্রণালয়ের শেষ বক্তব্যে বলেছি , এখান থেকে যাচ্ছি মনে একটা ব্যর্থতা নিয়ে। প্রবাসীদের জন্য অনেক কিছু করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু করতে পারিনি, এটাই বড় ব্যর্থতা। তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা হলো কর্মীদের জন্য ভালো ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করতে পারিনি।”
সাবেক প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, “৫ বছরে মাত্র ৫০ টি টিটিসি করতে পেরেছি এটা আমার ব্যর্থতা। আর এটা হয়েছে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে। তিনি বলেন, প্রথমে ৭১ টি টিটিসি করতে চেয়েছি। সবকিছু পরিকল্পনা করে একবারে শেষ পর্যায় গিয়েছি। আর তখনকার সচিব বঙ্গবন্ধুর শতবর্ষ পালন উপলক্ষে ৭১ টির পরিবর্তে ১০০ টিটিসি করার পরামর্শ দেন। তারপর এটা করো ওটা করো এমন করতে করতে আর শেষ পর্যন্ত ১০০টি করা হয়নি। পরে প্রধানমন্ত্রীর সাহায্যে ৫০ টি একনেকে পাশ করা হয়েছে।”
প্রবাসীদের প্লট বরাদ্দ নিয়ে ইমরান আহমদ বলেন, চা, কফি ছাড়াও সম্মান দেয়া যায়। যখন প্লট বরাদ্দ দেয়া হয় তখন প্রবাসীদের জন্য ৫ শতাংশ কোটা রেখে দিতে পারে। এতে প্রবাসীরা খুশি হবে যে তাদেরকে এটুকু সম্মান দেয়া হয়েছে। এছাড়া বিদেশে কর্মী পাঠানোর সময় দুই দেশের মধ্যে এমওইউ না করে চুক্তি করার পরামর্শ দেন তিনি।
কর্মীদের অসম্মানিত, অবহেলিত, নির্যাতিত অবস্থান থেকে নিজেদেরই বের হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন পার্লামেন্টারিয়ান্স ককার্স অন মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট চেয়ারম্যান তানভীর শাকিল জয়। তিনি বলেন, বিদেশে বাংলাদেশি কর্মীরা অসম্মানিত, অবহেলিত, নির্যাতিত হচ্ছে এটা একেবারেই বাস্তব কথা।
তিনি আরো বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত ভালো দক্ষ কর্মী বিদেশে পাঠাতে পারবো না ততক্ষণ পর্যন্ত বাংলাদেশি কর্মীরা নির্যাতিত অসম্মানিত হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশি কর্মীদের থেকে নেপালের কর্মীদের প্রতি নিয়োগদাতার আগ্রহ বেশি। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, নিয়োগদাতারা মনে করে বাংলাদেশি কর্মীদের থেকে নেপালের কর্মীরা অনেক দক্ষ। অল্প সময়ের মধ্যে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি থেকে বেশি নেপালি কর্মী থাকবে বলে মনে করেন তিনি।
এছাড়া কর্মী বেশি যাওয়া দেশগুলোতে দূতাবাসের লেবার উইং এর কার্যক্ষমতা এবং জনবল বাড়ানোর আহবান জানান তানভীর শাকিল জয়।
“আন্তর্জাতিকভাবে কোনো সনদের চুক্তি বাস্তবায়িত হচ্ছে না এটা শুধু আমাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ওয়্যারবি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুল হক।” তিনি বলেন, কর্মীদের উপর নির্যাতন করে ইউরোপ আমেরিকা আর দোষ দিচ্ছে বাংলাদেশের। তিনি বলেন, মে দিবসের অঙ্গীকার হবে কিভাবে কর্মীদের প্রতি নির্যাতন বন্ধ করা যায়, এর জন্য কাজ করতে হবে। এছাড়া তিনি বলেন, কাফালা পদ্ধতি অনেক বছর ধরে চালু আছে যেটা কিনা অনৈতিক কাজ। এটা বন্ধ করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, অনেক কর্মী বিদেশে মারা যাচ্ছে, তার কারণও সঠিকভাবে জানিনা। লাশ হয়ে ফিরে আসে, যার জরিমানাও পাচ্ছে না। এই লাশের জন্য, এই মৃত্যুর জন্য কারা দায়ী ? তারা কি ব্যবস্থা নিয়েছে তা জানা দরকার। অনেক কর্মী জেলে আছে, বিভিন্ন ডিটেনশন ক্যাম্পে আছে, বৈধভাবে গিয়ে সেখানে অবৈধ হয়ে যায় এইসব বিষয় নিয়ে কাজ করতে হবে বলেও জানান সৈয়দ সাইফুল হক।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, পার্লামেন্টারিয়ান্স ককার্স অন মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, বায়রা’র যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, আইএলও এর প্রজেক্ট ম্যানেজার রানুমা সালাম খান, পার্লামেন্টারিয়ান্স ককার্স অন মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের সদস্যসহ খাত সংশ্লিষ্টরা।