মালয়েশিয়ায় ৩ বাংলাদেশি কর্মী গ্রেপ্তার, পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ
- আপডেটের সময় : ০৯:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ মার্চ ২০২৪
- / 155
মালয়েশিয়ায় বেকস কনস্ট্রাকশন এসডিএন বিএইচডি নামে একটি কোম্পানির মালিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরকারী তিন বাংলাদেশি কর্মীকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের দ্বিমুখী নীতির অভিযোগ তুলেছে দেশটির মানবাধিকার সংগঠন পার্টি সোসিয়ালিস মালয়েশিয়া (পিএসএম)।
মানবাধিকার সংগঠন পার্টি সোসিয়ালিস মালয়েশিয়া’র ব্যুরো প্রধান এম. শিবরঞ্জনীর বরাতে, গতকাল শনিবার দেশটির গণমাধ্যম নিউ স্ট্রেইটস টাইমস ও ফ্রি মালয়েশিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলেছে, নিয়োগকারী কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রশাসন কোন ফৌজদারি ব্যবস্থা নেয়নি। বরং কর্মীদের কাজ দেয়নি, তাদের বেতন দেয়নি এবং তাদের পাসপোর্টও আটকে রেখেছে মালিক পক্ষ। কোম্পানির মালিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করায় তিন বাংলাদেশি কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ এবং তাদের বিরুদ্ধে দুটি অভিযোগে চার দিনের রিমান্ডও নেওয়া হয়েছে।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে , ভিকটিম কর্মীরা বিশ্বাস করে, এগুলি মূলত তাদের ট্র্যাপে ফেলে বানোয়াট অভিযোগ এনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাতে বাকি কর্মীরা ভয়ে চুপ হয়ে যায়।
শিবরঞ্জনী আরো বলেছেন, তিনজন কর্মী তাদের নিয়োগকর্তার বিরুদ্ধে পুলিশ রিপোর্ট এবং শ্রম বিভাগে রিপোর্ট করেছেন। বিষয়টি শ্রম বিভাগ ও মানবসম্পদ মন্ত্রীর কাছেও উপস্থাপিত হয়েছে।
পুরো ঘটনা মূলত সন্দেহজনক মোড়কে মোড়ানো মনে হচ্ছে বলে এমনই জানিয়েছে দেশটির অনলাইন ফোকাস মালয়েশিয়াও। তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় ওয়ার্ক পারমিটের আওতায় আনা ১৬০ জন কর্মীদের মধ্যে এই তিন (৩) জনও ছিলেন এবং বেকস কনস্ট্রাকশন এসডিএন বিএইচডি নামে কোম্পানিটি তাদের কাজের জন্য প্রতিমাসে বেসিক ১৫০০ রিঙ্গিত বেতনের কথাও দিয়েছিলো। তবে তারা মালয়েশিয়ায় আসার পর থেকে কোনো কাজ বা বেতন পাননি এবং বর্তমানে তারা বেকার জীবনযাপন করছেন।
তাদের এখানে নিয়ে আসার পর দেশটির রাজধানী কুয়ালালামপুরের পুত্রা ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের পাশে, ২৮, জালান রহমাত, চৌকিটের এসআর হোস্টেল এন্ড রেসিডেন্স এসডিএন বিএইচডিতে রাখা হয়েছে। দেশটির মানবাধিকার কর্মী শিবরঞ্জনী বলেছেন, তাদের পাসপোর্ট তাদের কোম্পানি মালিক আটকে রেখেছে। কোম্পানি মালিকের লোকজন কর্মীদের পাসপোর্ট ফেরত পেতে ৬০০০ রিঙ্গিত দিতে হুমকি দিয়ে বাধ্য করেছে।
তিনি বলেন, পিএসএম ৪ জানুয়ারি দেশটির সুবাং জয়া শ্রম বিভাগের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করতে সহায়তা করেছিল এবং ৩০ জানুয়ারি মানবসম্পদ মন্ত্রীর কার্যালয়ে এ অভিযোগটি পৌঁছে দিয়েছিলো। তারপর ৭ মার্চ, আমাদের একজন কর্মকর্তাকে বলা হয়েছিল যে, বিভাগটি কোম্পানি মালিককে দুটি বিকল্প রাস্তার কথা বলে দিয়েছিলো। এক, তার কর্মীদের দেশে ফেরত পাঠাতে বা তাদের জন্য নতুন কোনো কোম্পানিতে কাজের ব্যবস্থা করতে। এছাড়া, কোম্পানি মালিককেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যে, তার কর্মীদের মালয়েশিয়ায় আনার তারিখ থেকে তাদের মজুরি পরিশোধ করতে।
এদিকে কর্মীদের নিয়ে কাজ করা মানবাধিকার সংগঠন পার্টি সোসিয়ালিস মালয়েশিয়া (পিএসএম) পুলিশকে অবিলম্বে আটক হওয়া তিনজন কর্মীকে মুক্তি দিতে এবং ভিকটিম তিন কর্মীদের পাসপোর্ট ফেরত দেওয়া নিশ্চিত করার আহবান জানিয়েছে।
এছাড়া শিবরঞ্জনী দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রীকে আহবান জানিয়ে আরো বলেছেন, আমরা মানবসম্পদ মন্ত্রীকে দ্রুত সুষ্ঠু তদন্তের দাবি করছি এবং কর্মীদের তাদের বকেয়া মজুরির পরিশোধের পাশাপাশি নতুন কাজের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে এবং কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহবান জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠনটি।