মালয়েশিয়ায় প্রত্যাবাসন কর্মসূচি: নিজ দেশে ফিরতে ৫ হাজার ৯৮৩ আবেদন
- আপডেটের সময় : ০৫:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ মার্চ ২০২৪
- / 249
মালয়েশিয়ায় ১ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে অভিবাসী প্রত্যাবাসন কর্মসূচি। এ কর্মসূচির মাধ্যমে নিজ দেশে ফিরতে ৮ দিনে দেশটির অভিবাসন বিভাগে আবেদন করেছেন, ৫ হাজার ৯৮৩ জন অবৈধ অভিবাসী। যার মধ্যে ১ হাজার ৮৬৪ জন তাদের নিজ দেশে ফিরেছে।
শুক্রবার (৮ মার্চ) এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন, দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুশন ইসমাইল। সাইফুদ্দিন বলেছেন, প্রত্যাবাসন কর্মসূচিতে ৩ হাজার ১১৫ জন সবচেয়ে বেশি নিবন্ধিত হয়েছে ইন্দোনেশিয়ান নাগরিক। তারপরে বাংলাদেশের ৮৪৬ জন এবং ভারতের ৭০০ জন।
এ ছাড়া অন্যান্য দেশ থেকে রেকর্ডকৃত অভিবাসীদের মধ্যে রয়েছে পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, মায়ানমার, ফিলিপাইন, ইয়েমেন, সিরিয়া, মিশর, নাইজেরিয়া, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম এবং চীন। তবে বাংলাদেশি নিবন্ধিতদের মধ্য থেকে কতজন দেশে ফিরেছেন তা জানা যায়নি।
প্রত্যাবাসন কর্মসূচির মাধ্যমে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে স্বেচ্ছায় নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে। এমনটি বলেছেন,অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক, দাতুক রুসলিন জুসোহ। এই কর্মসূচির মাধ্যমে নথিপত্রবিহীন বিদেশিরা যারা আত্মসমর্পণ করবে তাদের বিরুদ্ধে কোনো বিচার ছাড়াই তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে।
তবে অভিবাসন অপরাধের জন্য তাদের জরিমানা দিতে হবে। নতুন কর্মসূচির আওতায় কোনো রকম নথিপত্র ছাড়া মালয়েশিয়া প্রবেশ করে থাকলে তাদের ৫০০ রিঙ্গিত আর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে খুব বেশি দিন হয়নি এমন অবৈধ অভিবাসীদের জন্য জরিমানা দিতে হবে ৩০০ রিঙ্গিত। যাদের আটক করা হচ্ছে, রিমান্ডে নেওয়া হচ্ছে এবং চার্জ করা হচ্ছে তারা পিআরএম প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের যোগ্য নয় বলে জানিয়েছেন, ইমিগ্রেশন মহাপরিচালক রুসলিন জুসোহ।
যারা দেশে ফিরবেন তারা ইমিগ্রেশন অফিসে যে নথিগুলি আনতে হবে তা হলো তাদের ফ্লাইট টিকিট, বৈধ ভ্রমণ নথি (পাসপোর্ট), পাসপোর্ট না থাকলে নিজ দূতাবাস থেকে ইস্যুকরা ট্রাভেল পারমিট যাকে বলা হয় ট্রাভেল পাস। রুলিন বলেন, পিআরএম প্রোগ্রাম সফল করতে ইন্দোনেশিয়া এবং বাংলাদেশসহ বিদেশি দূতাবাসগুলোর সহযোগিতা চাইতে শিগগিরই দূতাবাসগুলির সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।
টিকিটসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে ইমিগ্রেশন অফিসে আত্মসমর্পণ করার পর অভিবাসীদের ১৪ দিনের মধ্যে দেশ ত্যাগ করতে হবে। ১৮ বছরের কম বয়সীদের জরিমানা দিতে হবে না। জরিমানা (কম্পাউন্ড) পরিশোধের বিষয়ে, রুসলিন বলেন, বিভাগ বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পিআরএম বাস্তবায়নে কোনো এজেন্ট নিয়োগ করেনি। শুধু ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড বা টাচ ‘এন গো ই-ওয়ালেটের মতো ইলেকট্রনিক পেমেন্ট মোডগুলো জরিমানা পরিশোধের জন্য গৃহীত হবে। দালালদের খপ্পরে না পড়ে সরাসরি ইমিগ্রেশনে যোগাযোগ করতে অভিবাসীদের সতর্ক করছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ।
এদিকে দূতাবাস থেকে ট্রাভেল পারমিট নিতে বাংলাদেশিদের কোন কোন কাগজপত্র দিতে হবে তা জানিয়ে কুয়ালালামপুর বাংলাদেশ হাইকমিশনের ফেসবুক পেজে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ কেেছ। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈধ বাংলাদেশি পাসপোর্ট নেই এমন বাংলাদেশি নাগরিক মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশে ফিরে যেতে চাইলে ট্রাভেল পারমিটের জন্য আবেদন করতে হবে।
এতে বলা হয়, ট্রাভেল পারমিটের জন্য যথাযথভাবে পূরণকৃত ট্রাভেল পারমিটের আবেদনপত্র, সর্বশেষ পাসপোর্ট, তিন কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি এবং পাসপোর্ট না থাকলে এনআইডি, জন্মনিবন্ধন সনদ, নাগরিকত্ব সনদ ও সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও ইউএনও’র অফিসিয়াল চিঠির কপি নিয়ে ইন্টারভিউয়ের জন্য আবেদনকারীকে হাইকমিশনের অনুমোদিত এক্সপার্ট সার্ভিস কুয়ালালামপুর এসডিএন বিএইচডি, সাউথগেট কমার্শিয়াল সেন্টার লেভেল-২, ব্লক-ই, নং-২, জালান দোয়া অফ জালান চানসউলিং- ৫৫২০০, অফিসে উপস্থিত হতে হবে। এ ক্ষেত্রে দালালদের প্রলোভনে প্রতারিত না হওয়ারও পরামর্শ দিয়েছে হাইকমিশন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আবেদনের জন্য অফেরতযোগ্য ৪৪ রিঙ্গিত ও সার্ভিস চার্জ ২৫ রিঙ্গিতসহ মোট ৬৯ রিঙ্গিত ফি দিতে হবে। মালয়েশিয়ার যেকোনো মে ব্যাংকের ডিপোজিট কাউন্টারে অর্থপ্রদান করতে হবে এবং আবেদনের পত্রের সঙ্গে হলুদ রঙের ডিপোজিট স্লিপ সংযুক্ত করতে হবে। কোনো অনলাইন ট্রান্সফার, এটিএম ট্রান্সফার, ব্যাংক চেক, ডিমান্ড ব্যাংক ড্রাফ্ট গ্রহণ করা হবে না।
প্রতি সোমবার ও শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত কাউন্টারে আবেদন গৃহীত হবে। প্রক্রিয়াকরণের কমপক্ষে ১-২ কার্যদিবস সময় লাগতে পারে বলে হাইকমিশন জানিয়েছে। এছাড়া সোমবার ও শুক্রবার বিকেল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত ট্রাভেল পারমিট ডেলিভারি দেয়া হবে বলে জানানো হয়।