বিনা খরচে কর্মী পাঠানো বাড়াতে সকলকে দায়িত্বশীল থাকতে হবে: প্রবাসী কল্যাণ সচিব
- আপডেটের সময় : ১২:২৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
- / 235
সম্পূর্ণ বিনা খরচে মালয়েশিয়ায়গামী ১১৯ কর্মীর বিএমইটি স্মার্ট কার্ড বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ রুহুল আমিন বলেছেন, বিদেশে কর্মী পাঠানোর এই সুযোগ ধরে রাখতে সকলকে নিজের কাজে দায়িত্বশীল থাকতে হবে। তিনি বলেন, কর্মীদের যেমনি সচেতন হতে হবে, তেমনি কর্মীদের সঙ্গে কেউ প্রতারণা করলে সেটিরও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) জিরো কস্ট মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের আওতায় মালয়েশিয়াগামী কর্মীদের বিএমইটি স্মার্ট কার্ড বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। মালয়েশিয়ার নেশনগেট সলিউশন কোম্পানিতে সম্পূর্ণ বিনা খরচে এই কর্মীরা যাচ্ছেন। বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সি ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপনায় চতুর্থ ধাপে মালয়েশিয়া যাচ্ছে তারা।
সচিব রুহুল আমিন বলেন, প্রবাসী কর্মীরা দেশের উন্নয়নে যে ভূমিকা রাখছে তার জন্য প্রবাসীদের প্রতি কৃতজ্ঞ সরকার। এছাড়া প্রবাসী কর্মীদের কারো কথায় প্রলুব্ধ হয়ে কর্মস্থান ছেড়ে না যেতে অনুরোধ জানান।
প্রবাসী কল্যাণ সচিব আরো বলেন, বিদেশে কোনো কর্মীর সমস্যা হলে সে দেশে বাংলাদেশ দূতাবাস বা কনস্যুলার অফিস অথবা লেবার উইংয়ে জানালে সাথে সাথে কর্মীদের সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করা হবে। মালয়েশিয়াগামী এই কর্মীদের সে দেশের আইন ও নিয়ম কানুন মেনে চলার আহ্বান জানান সচিব রুহুল আমিন।
বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সি ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনালের কর্ণধার ও বায়রা’র সাবেক মহাসচিব রুহুল আমিন স্বপন জানান, এই কর্মীদের বাছাই প্রক্রিয়ায় শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হয়েছে। এজন্য মালয়েশিয়ার ন্যাশনগেট সলিউশন কোম্পানির কর্মকর্তারাও ঢাকায় এসে কর্মীদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। এছাড়া তিনি বলেন, বৈদেশিক কর্মসংস্থান খাত ও রিক্রুটিং এজেন্সির সুনাম বাড়াতে বিনা খরচে আরো বেশি সংখ্যায় কর্মী পাঠানোর জন্য এই প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে কর্মীদেরও সচেতন হতে হবে।
রুহুল আমিন স্বপন বলেন, “কোন কর্মীর কাছ থেকে কেউ একটি টাকাও নিয়ে থাকলে, সেটি আমাদের জানাতে হবে। এখানে কোন অস্বচ্ছতা থাকলে, এই সুযোগটি হাতছাড়া হয়ে যাবে। তাই কর্মী দেশে থাকা পর্যন্ত আমাদের কাছে বলা মাত্রই, তার টাকা ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে। কারণ এখানে মালয়েশিয়ার নিয়োগদাতা কোম্পানি সব খরচ বহন করছে। আমরা চাই মালয়েশিয়ার নিয়োগদাতারা বিশ্বাস করুক যে বাংলাদেশ থেকেও বিনা খরচে কর্মী পাঠানো সম্ভব।”
গেল বছরের ১৯ জুন (২০২৩) প্রথমবারের মতো বেসরকারিভাবে সম্পূর্ণ বিনা খরচে মালয়েশিয়ায় পাঠানো হয় ২০ কর্মীকে। এর মাধ্যমে ‘জিরো কস্ট মাইগ্রেশন’ কর্মসূচিতে প্রবেশ করে বাংলাদেশ। আগে এই সুযোগ পেত নেপাল। বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সি ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও জেজি আল ফালাহ ম্যানেজমেন্টের ব্যবস্থাপনায় কর্মীরা মালয়েশিয়ায় যায়।
এরপর ২৭ আগস্ট ২০২৩ দ্বিতীয় ধাপে আরো ৩১ কর্মী সম্পূর্ণ বিনা খরচে মালয়েশিয়া যায় । বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সি ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনাল এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও ব্যবস্থাপনায় এই কর্মীরা মালয়েশিয়া যায়। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো- বিএমইটির সভাকক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে কর্মীদের পাসপোর্ট, ভিসা ও বিএমইটি’র ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স কার্ড তুলে দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিদায় জানান বিএমইটির মহাপরিচালক শহীদুল আলম এনডিসি ও ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান রুহুল আমিন স্বপনসহ বায়রা ও মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা।
তৃতীয় পর্যায়ে ২১ ডিসেম্বর (২০২৩) ৬৫ কর্মীর আরেকটি দল সম্পূর্ণ বিনা খরচে মালয়েশিয়া কর্মসংস্থানের সুযোগ পায়। একদিন আগে, ২০ ডিসেম্বর ২০২৩ প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কর্মীদের পাসপোর্ট, ভিসা ও বিএমইটি’র ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স কার্ড তুলে দেয়া হয়। মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কর্মীদের দেশটির আইন ও নিয়মনীতি মেনে চলার পরামর্শ দেন।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি বায়রা’র মহাসচিব আলী হায়দার চৌধুরী, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ খায়রুল আলম, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক মোঃ হামিদুর রহমান, বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিঃ বোয়েসেল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মল্লিক আনোয়ার হোসেন, ও প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মজিবর রহমানসহ মন্ত্রণালয় এবং খাত সংশ্লিষ্টরা।