২০২৪ সালের হজের বিমান ভাড়া কমানোর দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছে হজ্জ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)।
রোববার (৫ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চিঠিটি পাঠান হাবের সভাপতি এম.শাহাদাত হোসাইন তসলিম। চিঠিটি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের ডাক ও বিতরণ শাখা গ্রহণ করেছে।
চিঠিতে একটি স্বতন্ত্র টেকনিক্যাল কমিটির মাধ্যমে হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া পুনঃনির্ধারণের আবেদন করা হয়। যেখানে সরকার নির্ধারিত এক লাখ ৯৪ হাজার ৮০০ টাকার পরিবর্তে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা করার আবেদন করা হয়েছে।
গত ২ নভেম্বর সরকারি ব্যবস্থাপনায় ২০২৪ সালের হজের জন্য দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে সরকার। এরমধ্যে সাধারণ প্যাকেজে খরচ পড়বে ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০ টাকা। আর বিশেষ হজ প্যাকেজে খরচ পড়বে ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩২০ টাকা। দুই প্যাকেজেই বিমান ভাড়া পড়বে ১ লাখ ৯৪ হাজার ৮০০ টাকা। গতবার যা ছিল ১ লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৭ টাকা।
বিমান ভাড়া কমানোর দাবি করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, এ বছরের বিমান ভাড়া ১ লাখ ৯৪ হাজার ৮০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। নির্ধারিত ভাড়া গত বছরের তুলনায় ২ হাজার ৯৯৭ টাকা কম হলেও বিভিন্ন বিষয় বিবেচনায় আরও কমানো সম্ভব। যেহেতু বিমান একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, তাই তাদের একক কর্তৃত্বে ভাড়া নির্ধারণ যথাযথ হয়নি বলে হাব কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদ মনে করে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, বর্তমানে এয়ারলাইন্সগুলো প্রায় ৭৫ হাজার টাকায় ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রিটার্ন টিকিট বিক্রি করছে এবং প্রায় ২০ শতাংশ আসন খালি রেখে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। হজের সময় প্রায় শতভাগ যাত্রী নিয়ে ফ্লাইট গমন করে। তাছাড়া খালি ফিরতি ফ্লাইটের পরিচালনা ব্যয়ও কম। সাধারণ ফ্লাইটের বিপণন ও সিস্টেম পরিচালনায় অতিরিক্ত ব্যয় করতে হয়, যা হজের ফ্লাইটে করতে হয় না। সে হিসাবে ডেডিকেটেড হজ ফ্লাইটের সর্বোচ্চ ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিমান ভাড়া হতে পারতো।
প্রধানমন্ত্রী বরাবর চিঠিতে হাব জানিয়েছে, ‘আপনার সরাসরি দিকনির্দেশনা ও প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশের হজ ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন সাধিত হয়েছে এবং বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশের হজ ব্যবস্থাপনা সৌদি সরকারের কাছেও প্রশংসিত হয়েছে। বাংলাদেশের হজযাত্রীদের কল্যাণে ও সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার স্বার্থে আপনার নেওয়া সকল পদক্ষেপ এরই মধ্যে সর্বমহলে বিশেষ করে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মাঝে প্রশংসিত ও সমাদৃত হয়েছে। হজযাত্রীদের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স প্রথা বাতিল, আধুনিক ই-হজ ব্যবস্থাপনা, হজযাত্রীদের সৌদি আরবের ইমিগ্রেশন বাংলাদেশে সম্পন্নকরণ, আশকোনা হজ ক্যাম্প সংস্কার ও বর্ধিতকরণসহ হজযাত্রীদের ভোগান্তি নিরসনকল্পে সামগ্রিক হজ ব্যবস্থাপনায় ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য আপনি যে অসামান্য ভূমিকা রেখেছেন তা বাংলাদেশের হজ ব্যবস্থাপনার ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে থাকবে। এ জন্য বাংলাদেশের সকল হজযাত্রী ও হজ এজেন্সির পক্ষ থেকে আপনার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।’
এতে বলা হয়, ‘পবিত্র হজের সঙ্গে বাংলাদেশের মুসলমানদের আবেগ-অনুভূতি নিবিড়ভাবে জড়িত। বিষয়টি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ভীষণ রকমের স্পর্শকাতর। কেবল হজযাত্রীদের পরিবার পরিজন, আত্মীয়স্বজন এবং পাড়া প্রতিবেশীই নয় বাংলাদেশের সকল মুসলিম নাগরিক হজ ব্যবস্থাপনার বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে। হজ্জ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল হজ ব্যবস্থাপনার স্বার্থে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে আপনার সরকারকে সহযোগিতা করে আসছে এবং ভবিষ্যতেও সকল প্রকার সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।’
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২০২৪ সালের ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য দ্রুতই হজযাত্রী নিবন্ধনের কার্যক্রম শুরু হবে। আগামী ১ মার্চ ২০২৪ হতে হজ ভিসা ইস্যু এবং ৯ মে ২০২৪ হতে হজ ফ্লাইট শুরু হবে।
বাংলাদেশ থেকে আগামী বছর মোট ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজে যেতে পারবেন যার মধ্যে সরকারি মাধ্যমে ১০ হাজার ১৯৮ জন এবং বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে ১ লাখ ১৭ হাজার জন হজ পালন করতে পারবেন।