বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে প্রবাসীদের উৎসাহিত করতে চলমান ২.৫ শতাংশ প্রণোদনার পাশাপাশি এবার ব্যাংকগুলো আরো ২.৫ শতাংশ প্রণোদনা দেবে। ফলে নতুন নিয়মে এখন থেকে বৈধ পথে দেশে বৈদেশিক আয় পাঠালে মোট ৫ শতাংশ প্রণোদনা পাবেন প্রবাসীরা।
রোববার (২২ অক্টোবর) থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকরের জন্য ব্যাংকগুলোকে চিঠি দিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ অথরাইজড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা)। এর আগে গত শুক্রবার সংগঠন দুটি এক ভার্চুয়াল সভায় প্রণোদনা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে শনিবার ব্যাংকগুলোকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চলতি বছরের ২২ অক্টোবর থেকে ব্যাংকগুলো প্রতি ডলারে সঙ্গে আড়াই শতাংশ হারে প্রণোদনা দিতে পারবে। তবে আমদানি ডলার বিক্রির দর ১১০ টাকা ৫০ পয়সা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
বর্তমানে প্রবাসীদের আয়ে ব্যাংকে এক মার্কিন ডলারের দাম ১১০ টাকা ৫০ পয়সা। এর ওপর সরকার আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দেয়। এখন এক ডলারে পাচ্ছে ১১৩ টাকা ২৬ পয়সার কিছু বেশি। এখন এর সঙ্গে ব্যাংকগুলো দেবে আরও ২.৫ শতাংশ বাড়তি দাম। ফলে রেমিট্যান্সের এক ডলারে মিলবে ১১৬ টাকার কিছু বেশি।
ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, নির্ধারিত দামে ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। তাই রেমিট্যান্স হাউসগুলো থেকে বেশি দামে প্রবাসী আয় কিনতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ডলার সংকট কাটাতে এমন সিদ্ধান্ত। তাদের ধারণা, নতুন এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রবাসীরা বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে আগ্রহী হবে।
এক বছরেরও বেশি সময় ডলারের বাজারে অস্থিরতা চলছে। তাতে ডলারের আনুষ্ঠানিক দাম ৮৫ টাকা থেকে বাড়তে বাড়তে কিছু ক্ষেত্রে ১১১ টাকা অতিক্রম করেছে। আর খোলা বাজারে তা ১২০ টাকায় উঠেছে।
এর আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ সিদ্ধান্তের কারণে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী আয় পাঠানোর পরিমাণ বেড়ে ২০১৯-২০ অর্থবছরে দাঁড়ায় ১৮.২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা পূর্ববর্তী অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ১৩ শতাংশ বেশি। ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছে ২৪.৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ২০১৯-২০ অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৩৬ শতাংশ বেশি। এরপর ২০২২ সালের ১লা জানুয়ারি আবারো বৃদ্ধি করা হয় প্রবাসী আয়ে প্রনোদনার হার। শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ বাড়িয়ে মোট ২.৫ শতাংশ প্রনোদনা এতোদিন পেতেন প্রবাসীরা। তবে এখন নতুন নিয়মে প্রবাসীরা পাবেন অতিরিক্ত মোট ৫ শতাংশ প্রনোদনা বা নগদ সহায়তা।