প্রবাসীদের কল্যাণে মন্ত্রণালয়ের মানবিক ও সফল এক উদ্যোগ হচ্ছে জীবন বীমা চালু করা বিশেষ করে প্রবাসী কর্মী ও তাদের পরিবারের জন্য এই ‘প্রবাসী কর্মী বীমা’ স্কীম খুবই উপকারে এসেছে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ তিনি বলেন, প্রবাসীরা দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল রেখেছেন প্রবাসীরা দেশকে অনেক দিয়েছেন, এই রেমিট্যান্স যোদ্ধা প্রবাসীদের সম্মান দেয়া ও কল্যাণ নিশ্চিত করাই তাঁর মন্ত্রণালয়ের প্রধান কাজ সেই চেষ্টার একটি হচ্ছে ‘প্রবাসী কর্মী বীমা’
২০১৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর এই বীমা চালু করা হয় সরকারি প্রতিষ্ঠান জীবন বীমা করপোরেশন ও ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মধ্যে বীমা সংক্রান্ত একটি চুক্তি সই হয় চালুর পর এখন পর্যন্ত ৩ দফা বীমার শর্ত ও সুবিধা পরিবর্তন করা হয়েছে সবশেষ বীমা চুক্তি অনুযায়ি, বিদেশ যাওয়ার আগে বিএমইটি ক্লিয়ারেন্স নেয়ার সময় বাধ্যতামূলক নিয়মে মাত্র ১ হাজার টাকা একবার দিয়েই এই বীমার সুবিধা পাচ্ছেন প্রবাসীরা
মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, প্রবাসীরা বিদেশে নানা ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করেন অনেকেই দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে, বিদেশে কোন প্রবাসী মৃত্যু হলে, তার পরিবার একেবারেই দিশেহার হয়ে যায় বিশেষ করে পরিবারের উপার্জন করা মানুষটির কোন সমস্যা হলে কোন উপায় থাকে না কিন্তু এই বীমা চালুর ফলে সেই অনিশ্চয়তা কিছুটা হলেও কমেছে যদিও একজন প্রবাসীও বিদেশের মাটিতে দুর্ঘটনাকবলিত হোক বা মারা যাক, তা কেউই চায় না কিন্তু কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে আগে তো এ ধরণের কোন সহায়তা ছিল না তাই প্রবাসীদের কল্যাণেই এই জীবন বীমা চালু করা হয়েছে

মন্ত্রী জানান, শুরুতে এই বীমার সুবিধা বা কাভারেজের মেয়াদ ছিল ২ বছর তখন মৃত্যুজনিত কারণে বীমা দাবির অর্থের পরিমান ২ লাখ টাকা এর পরে বীমা দাবির মৃত্যুজনিত অর্থের পরিমান করা হয়েছে ৪ লাখ টাকা আর সব শেষ ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে যারা বিদেশে যাচ্ছেন, তাদের জন্য বীমার মেয়াদ করা হয়েছে ৫ বছর শুধু তাই নয়, এখন মৃত্যু জনিত বীমা দাবির অর্থের পরিমান ১০ লাখ টাকা প্রবাসীরা কেউ বিদেশে মারা গেলে তার পরিবার ১০ লাখ টাকা সহায়তা পাবে
ইমরান আহমদ বলেন, প্রবাসীদের এই বীমার সুবিধা শুধু মৃত্যুর পরে তার পরিবার পাবে এমনটি নয় নতুন চুক্তি অনুযায়ি কোন প্রবাসী যদি বিদেশে যাওয়ার পর ৬ মাসের মধ্যে যেকোনো কারণে ফিরে আসে, তাহলে তিনি পাবেন ৫০ হাজার টাকা যে একেবারে সব হারিয়ে ফিরে আসে, তার জন্য এই ৫০ হাজার টাকা একটু হলেও কাজে আসবে মন্ত্রী বলেন, এই বীমার প্রতিটি শর্তই রাখা হয়েছে প্রবাসীদের কল্যাণ মাথায় রেখে এছাড়া দুর্ঘটনার গুরুতর আহতরাও বীমার আওতায় আর্থিক সহায়তা পাবে
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী বলেন, প্রবাসীদের কল্যাণ নিশ্চিত করাই এই মন্ত্রণালয়ের কাজ এজন্যই প্রবাসী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সুবিধার জন্য ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের বিভিন্ন সেবা চালু রয়েছে যেমন, কোন প্রবাসী বিদেশে মারা গেলে, দাফনের জন্য বিমানবন্দর থেকে ৩৫ হাজার টাকা সহায়তা দেয়া হয় এর পর তার পরিবারকে ৩ লাখ টাকার সহায়তা দেয়া হয় যাতে করে ঐ পরিবার বা প্রবাসীর সন্তানরা চলতে পারে এছাড়া অসুস্থ প্রবাসীকে আর্থিক সহায়তা দেয়া, প্রবাসীর সন্তানদের বৃত্তি দেয়াসহ নানা সেবা আগে থেকেই চালু রয়েছে
প্রবাসী ও তাদের পরিবারে জন্য বিমানবন্দরের কাছে নামমাত্র খরচে হোস্টেল সুবিধায় বঙ্গবন্ধু ওয়েজ আর্নার্স সেন্টার চালু করা হয়েছে এছাড়া প্রবাসী ও পরিবারের সদস্যদের জন্য একটি হাসপাতাল নির্মাণ করা হচ্ছে এসবই করা হচ্ছে রেমিট্যান্স যোদ্ধা প্রবাসীদের সম্মান দেয়ার জন্য
কোন প্রবাসী বা তার পরিবার এই বীমার দাবির অর্থ পেতে হলে, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিষ্ঠান ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডে যোগাযোগ করতে হবে এছাড়া জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস, সংশ্লিষ্ট দেশে বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কল্যাণ উইং-এ লিখিতভাবে বীমাদাবির বিষয়টি জানাতে পারেন আরো তথ্যের জন্য ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের – প্রবাস বন্ধু কল সেন্টার – ১৬১৩৫ (টোল ফ্রি) এবং +৮৮ ০৯৬ ১০১০ ২০৩০ (বিদেশ থেকে) নাম্বারে যোগাযোগ করতে পারেন