মালয়েশিয়ায় দ্রুতগতিতে বাংলাদেশি কর্মী প্রবেশের হারকে উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাজ্য বংশোদ্ভূত আন্তর্জাতিক অভিবাসন বিশেষজ্ঞ মিঃ অ্যান্ডি হল। যিনি একজন শ্রম অধিকার কর্মী এবং এশিয়া ভিত্তিক গবেষক।
তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, দ্রুত গতিতে বাংলাদেশি কর্মীরা মালয়েশিয়ায় আসছে। বিশেষ করে অনেকে আসার পরে দেশটিতে আটকা পড়ে। তার মতে, আরেকটি উদ্বেগের বিষয় হলো, মালয়েশিয়ায় কাজ করতে আসা অন্যান্য দেশ (জাতীয়) তাদের চেয়ে বাংলাদেশিদের সংখ্যা অনেক বেশি।
বাংলাদেশের জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোকে উদ্ধৃত করে সম্প্রতি বাংলাদেশি সংবাদপত্র জানিয়েছে, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে শ্রমবাজার পুনরায় খোলার পর থেকে ৪৫০,০০০ অনুমোদিত কর্মীর মধ্যে ৩ লাখেরও বেশি কর্মী মালয়েশিয়ায় গেছে। আরও ১ লাখ ২০ হাজার কর্মী মালয়েশিয়া যাওয়ার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
চলতি বছরের আগস্ট মাসে, বাংলাদেশ এক মাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক জনশক্তি রপ্তানির রেকর্ড করেছে। ১ লাখ ৩৮ হাজারেরও বেশি কর্মী দেশ ছেড়েছে। যার মধ্যে ৪৬ হাজার ১০৫ জন মালয়েশিয়ায় গেছেন।
২০ সেপ্টেম্বর ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে, অভিবাসী অধিকার কর্মী মিঃ অ্যান্ডি হল এর বক্তব্য উদ্ধৃত করে সংবাদে বলা হয়েছে“এটা খুবই উদ্বেগের বিষয়। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মী মালয়েশিয়ায় আসছে। সংখ্যাটি অন্যান্য দেশের চেয়ে অনেক বেশি। দুই বছরেরও কম সময়ে ৩ লাখেরেও বেশি কর্মী মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করেছে।”
অ্যান্ডি হল বলেন,”আমরা জানি এই বাংলাদেশি কর্মীদের মধ্যে অনেকেরই অত্যধিক নিয়োগের খরচ বহন করতে ঋণের দাসত্বে আবদ্ধ হবার কারণে মালয়েশিয়ায় তীব্র আধুনিক দাসত্বের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশি অভিবাসীরা প্রত্যেকে ৬ হাজার মার্কিন ডলার (২৮,১৪০ রিঙ্গিত) এর বেশি অর্থ প্রদান করছে, যা অন্যান্য দেশের কর্মীদের তুলনায় নিয়োগের খরচ তীব্রভাবে বেড়েছে।” হল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা বাংলাদেশি অভিবাসীদের সিন্ডিকেট দ্বারা মালয়েশিয়ায় সংঘটিত সমস্যার প্রধান হলো চাকরি না দেওয়া আর এই সমস্যার পুরোপুরি সমাধান হয়নি।
যদিও এসব মালয়েশিয়ার ভুয়া নিয়োগকর্তা এবং ভুয়া এজেন্টদের কারণে ঘটেছে। বাংলাদেশ সরকার মালয়েশিয়ায় তার নাগরিকদের সাথে দুর্ব্যবহার এবং ঋণের দাসত্বের মধ্যে নিপতিত করার জন্য যেন সিন্ডিকেটগুলিকে র দ্বারা অনুমতি দিয়েছে বলে অ্যান্ডি হল মন্তব্য করেন।
সাড়ে তিন বছরের নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য শ্রমবাজার পুনরায় চালু করতে মালয়েশিয়া ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। এর আলোকে ২০২২ সালের ৮ আগষ্ট থেকে নিয়মিত বাংলাদেশি কর্মী যাচ্ছে দেশটিতে।