সিঙ্গপুরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন দেশটির সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী থারমান শান মুগারত্মম (৬৬)। শুক্রবার তার দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কিন লিয়ান (৭৫) এবং এনজি কোক সং (৭৫) কে পরাজিত করে এই জয় অর্জন করেছেন তিনি।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ভোট গণনা শেষে সিঙ্গাপুর নির্বাচন কমিশনের রিটার্নিং কর্মকর্তা তান মেঙ এই ফলাফল ঘোষণা করেন। ৭০ দশমিক ৪ শতাংশ ভোট পেয়ে এই বিজয় নিশ্চিত করেছেন শান মুগারত্নম।
সিঙ্গাপুরে মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকার প্রচলিত পদ্ধতিতে পরিচালিত হয়। প্রেসিডেন্টের পদ সেখানে অনেকটাই আলঙ্করিক। তবে অন্যান্য মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকারের প্রেসিডেন্টের তুলনায় সিঙ্গাপুরের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব খানিকটা বেশি। সিঙ্গাপুরের সংবিধান অনুসারে নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি অতিরিক্ত যে দায়িত্ব প্রেসিডেন্টকে পালন করতে সেগুলো হলো- নগর রাষ্ট্রটির আর্থিক রিজার্ভ দেখভাল করা। এছাড়া সুনির্দিষ্ট কিছু তিনি বিষয়ে ভেটো প্রদানের ক্ষমতা রাখেন এবং যে কোনো দুর্নীতিবিরোধী তদন্তের অনুমোদন দেওয়ারও এখতিয়ার রাখেন।
সিঙ্গাপুরের প্রেসিডেন্টের মেয়াদ ৬ বছর। সাংবিধানিকভাবে নির্বাচনের ভিত্তিতে প্রেসিডেন্ট আসার কথা থাকলেও গত এক যুগেরও বেশি সময় এই নির্বাচন হয়নি দেশটিতে। ক্ষমতাসীন দল পিপল’স অ্যাকশন পার্টির (পিএপি) সুপারিশের ভিত্তিতেই এতদিন প্রেসিডেন্ট নিয়োগ দেওয়া হতো। গত প্রায় ৬০ বছর ধরে এই নগররাষ্ট্রে ক্ষমতায় আছে পিএপি এর সরকার।
সাংবিধানিকভাবে এই পদে নির্দলীয় ব্যক্তির আসার কথা থাকলেও গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে যারা প্রেসিডেন্ট হয়েছেন তারা কোনো না কোনো ভাবে পিএপি’র সঙ্গে সম্পৃক্ত। ভারতীয় বংশোদ্ভূত থারমান শানমুগারত্মম পিএপি’র একজন সাবেক নেতা এবং বেশ প্রভাবশালী ব্যক্তি। নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের মতে, পিএপি’র সব ভোটই পড়েছে তার ঝুলিতে।
দেশটির বিদায়ী প্রেসিডেন্ট হালিমা ইয়াকোবও পিএপি’র সমর্থক ছিলেন, ২০১৭ সালে দেশটির প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন তিনি। ৬৬ বছর বয়সী অর্থনীতিবিদ এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী থারমান শানমুগারত্মম নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার আগে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আজকের ভোট ছিল সিঙ্গাপুরের আত্মবিশ্বাসের প্রতিফলন। এটি এমন ভোট, যা আমাদেরকে একত্রে সামনে এগিয়ে যাওয়া ও একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ নির্মাণের পথে এগিয়ে নেবে।