মালয়েশিয়ায় মানবপাচার চক্রের মূলহোতা মো. ইসমাইল (৪৫) সহ তার দুই সহযোগী মো. জসিম (৩৫) ও মো. এলাহী (৫০) কে গ্রেফতার করেছে এলিট ফোর্স র্যাপিড আ্যকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
শনিবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি জানান, একটি প্রতারক চক্র রোহিঙ্গাদের মাধ্যমে টাকা ছাড়াই মালয়েশিয়ায় যাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মিয়ানমারের জঙ্গলে নিয়ে বন্দি করে মুক্তিপণ আদায় করত। সম্প্রতি এই প্রতারকদের ফাঁদে পা দিয়ে নির্যাতনে প্রাণও হারিয়েছেন একজন।
খন্দকার আল মঈন বলেন, চলতি বছরের ১৯ মার্চ নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার এলাকার ২২ জন যুবক মানবপাচার চক্রের মাধ্যমে টেকনাফ থেকে নৌপথে মালয়েশিয়া যাচ্ছিলেন। এ সময় মিয়ানমারের কোস্টগার্ডের হাতে ১৯ জন আটক হন। পালিয়ে যান তিনজন। পালিয়ে যাওয়া তিনজনের একজন জহিরুলকে আটকে রাখা হয় মিয়ানমারে। করা হয় নির্মম নির্যাতন।
এ ঘটনায় গত ১৫ এপ্রিল আবুল কালাম আজাদ নামে একজন বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানায় মানবপাচার আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
তিনি বলেন, বিনা পাসপোর্ট-ভিসায় যাওয়া যাবে মালয়েশিয়া। প্রাথমিকভাবে দিতে হবে না এক টাকাও। যাওয়ার পর কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা। এমন প্রলোভনে প্রতারণার জাল পাতে ইসমাঈল, জসিম ও এলাহী।
র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, রোহিঙ্গাদের সহায়তায় নতুন এই রুটে সাগর পথে মালয়েশিয়া পৌঁছে দেয়ার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতো চক্রটি। না দিলেই করা হতো নির্যাতন।
সাগর পথে বিদেশ যাত্রার ফাঁদে পড়ে জীবন বিপন্ন না করার পরামর্শ দেন তিনি।
জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে পারিবারিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মা সাইন প্রিন্টিং প্রেসে বড় ভাই আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে কাজ করতো জহিরুল ইসলাম (৩৮)। গত মার্চে দোকানের পাশ থেকে নিখোঁজ হন তিনি। এক মাস পর পরিবার জানতে পারে জহিরুল মিয়ানমারে বন্দি। মুক্তিপণ হিসেবে চাওয়া হয় ৬ লাখ টাকা।
তার পরিবার ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা ইসলামী ব্যাংকের একটি একাউন্টে পাঠান। এরপর বিকাশে আরও টাকা পাঠান। নগদ টাকা নিতে এসে গত এপ্রিলে চক্রের আবুল নামে এক সদস্য পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। এই খবরে জহিরুলের ওপর নেমে আসে অমানবিক নির্যাতন। একপর্যায়ে মারা যান জহিরুল।