ঢাকা , শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৬ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :

সৌদি থেকে অবৈধ কর্মীদের দেশে ফেরাতে দেশটির সরকারে সহযোগিতা চাইলেন রাষ্ট্রদূত

Print Friendly, PDF & Email

 

সৌদি আরবে বিভিন্ন কারণে অবৈধ হয়ে যাওয়া বাংলাদেশি কর্মীদের দ্রুত দেশে ফেরাতে দেশটির উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়েছেন সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার)।

 

সৌদিতে কর্মরত যেসকল অবৈধ কর্মী এরইমধ্যে দেশে ফেরার জন্য আবেদন করেছেন তাঁদের দ্রুত দেশে ফেরার সুযোগ প্রদানের জন্য দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার বিষয়ক উপমন্ত্রী আলি বিন আব্দুর রহমান আল ইউসুফকে অনুরোধ জানান রাষ্ট্রদূত।

 

গেল বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে দেশটির উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে এ অনুরোধ জানান রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী।

 

এ সময় রাষ্ট্রদূত বলেন, যে সকল বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মীদের নামে কর্মক্ষেত্র থেকে পালানোর মামলা (হুরুব) রয়েছে বা ইকামার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে এবং যারা দেশে ফেরার জন্য আবেদন করেছেন তাদের দেশে ফেরার জন্য ছাড়পত্র পেতে কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হয়। এ সকল অভিবাসীদের বেশিরভাগ বেকার অবস্থায় দীর্ঘদিন প্রবাসে থেকে আর্থিক সংকটে পড়েন যা বিদেশে তাঁদের জন্য অত্যন্ত কষ্টদায়ক হয়ে পড়ে। এ সকল অবৈধ কর্মীদের দ্রুত বাংলাদেশে ফেরার সুযোগ প্রদানের জন্য সৌদির উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান রাষ্ট্রদূত।

 

বৈঠকে সৌদির উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, বাংলাদেশি অনেক কর্মী বিভিন্ন অভিযোগে সৌদি আরবে আটক রয়েছে। যেহেতু তারা তাদের পরিবারের উপার্জনকারী সদস্য, তাই আটক এ সকল কর্মীর পরিবারগুলো বাংলাদেশে অনেক কষ্টে রয়েছে। যারা গুরুতর অপরাধের জন্য বন্দী নন এ সকল বাংলাদেশি অভিবাসীদের জন্য সৌদি রাজকীয় ক্ষমা বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করেন রাষ্ট্রদূত।

 

এছাড়া রাষ্ট্রদূত জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, উদার এবং কর্ম বান্ধব কর্মী নীতি হওয়ার পর বিদেশি কর্মীদের সৌদি আরব একটি আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। এজন্য আমরা সৌদি সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে সৌদি আরবে কাজ করার একটা প্রবণতা রয়েছে। বর্তমানে অভিবাসী কর্মীদের মধ্যে বাংলাদেশি কর্মী সৌদি আরবে সবচেয়ে বেশি। এ সময় অভিবাসী কর্মীদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। যা প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও আয়োজিত যৌথ কমিশন সভায় উল্লেখ করা হয়েছে।

 

রাষ্ট্রদূত বলেন, ভিশন ২০৩০ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে সৌদি আরব দক্ষ জনশক্তিকেই স্বাগত জানাবে। তাই বাংলাদেশে আমরা আমাদের কর্মীদের প্রয়োজনীয় দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি। এসময় বাংলাদেশি কর্মীরা কঠোর পরিশ্রমী ও তাঁরা সৌদি অর্থনীতির উন্নয়নে ভূমিকা রাখছেন বলে মন্তব্য করেন সৌদি উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলি বিন আব্দুর রহমান আল ইউসুফ। তিনি বাংলাদেশি কর্মীদের সমস্যাগুলো মনোযোগ সহকারে শুনেন ও তা আশু সমাধানের উদ্যোগ নিবেন মর্মে রাষ্ট্রদূতকে অবহিত করেন সৌদি উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

 

মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারি আরো বলেন, বাংলাদেশে সৌদি দূতাবাসে কালচারাল এ্যাটাচে নিয়োগ প্রদানের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন। যাতে বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে আরও বেশি শিক্ষার্থী তাদের কাগজপত্র দ্রুত সত্যায়িত করে সৌদি আরবে আসতে পারে। এছাড়া দক্ষ ও প্রফেশনাল অভিবাসী যারা সৌদি আরবে আসতে ইচ্ছুক তাদের সনদ দ্রুততার সাথে সত্যায়িত করার জন্য সৌদি দূতাবাসে একজন কালচারাল এ্যাটাচে নিয়োগের অনুরোধ জানান রাষ্ট্রদূত।

 

বৈঠকে সৌদি আরবে ২৮ লাখ বাংলাদেশির কর্মসংস্থানের জন্য সৌদি বাদশা সালমান বিন আব্দুল আজিজ এবং যুবরাজ প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমানকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার)।

Tag :
জনপ্রিয়

মালয়েশিয়ায় মৃত্যুদন্ড থেকে রেহাই পেলেন বাংলাদেশি

সৌদি থেকে অবৈধ কর্মীদের দেশে ফেরাতে দেশটির সরকারে সহযোগিতা চাইলেন রাষ্ট্রদূত

আপডেট: ০৭:০৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ অগাস্ট ২০২৩
Print Friendly, PDF & Email

 

সৌদি আরবে বিভিন্ন কারণে অবৈধ হয়ে যাওয়া বাংলাদেশি কর্মীদের দ্রুত দেশে ফেরাতে দেশটির উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়েছেন সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার)।

 

সৌদিতে কর্মরত যেসকল অবৈধ কর্মী এরইমধ্যে দেশে ফেরার জন্য আবেদন করেছেন তাঁদের দ্রুত দেশে ফেরার সুযোগ প্রদানের জন্য দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার বিষয়ক উপমন্ত্রী আলি বিন আব্দুর রহমান আল ইউসুফকে অনুরোধ জানান রাষ্ট্রদূত।

 

গেল বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে দেশটির উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে এ অনুরোধ জানান রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী।

 

এ সময় রাষ্ট্রদূত বলেন, যে সকল বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মীদের নামে কর্মক্ষেত্র থেকে পালানোর মামলা (হুরুব) রয়েছে বা ইকামার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে এবং যারা দেশে ফেরার জন্য আবেদন করেছেন তাদের দেশে ফেরার জন্য ছাড়পত্র পেতে কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হয়। এ সকল অভিবাসীদের বেশিরভাগ বেকার অবস্থায় দীর্ঘদিন প্রবাসে থেকে আর্থিক সংকটে পড়েন যা বিদেশে তাঁদের জন্য অত্যন্ত কষ্টদায়ক হয়ে পড়ে। এ সকল অবৈধ কর্মীদের দ্রুত বাংলাদেশে ফেরার সুযোগ প্রদানের জন্য সৌদির উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান রাষ্ট্রদূত।

 

বৈঠকে সৌদির উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, বাংলাদেশি অনেক কর্মী বিভিন্ন অভিযোগে সৌদি আরবে আটক রয়েছে। যেহেতু তারা তাদের পরিবারের উপার্জনকারী সদস্য, তাই আটক এ সকল কর্মীর পরিবারগুলো বাংলাদেশে অনেক কষ্টে রয়েছে। যারা গুরুতর অপরাধের জন্য বন্দী নন এ সকল বাংলাদেশি অভিবাসীদের জন্য সৌদি রাজকীয় ক্ষমা বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করেন রাষ্ট্রদূত।

 

এছাড়া রাষ্ট্রদূত জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, উদার এবং কর্ম বান্ধব কর্মী নীতি হওয়ার পর বিদেশি কর্মীদের সৌদি আরব একটি আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। এজন্য আমরা সৌদি সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে সৌদি আরবে কাজ করার একটা প্রবণতা রয়েছে। বর্তমানে অভিবাসী কর্মীদের মধ্যে বাংলাদেশি কর্মী সৌদি আরবে সবচেয়ে বেশি। এ সময় অভিবাসী কর্মীদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। যা প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও আয়োজিত যৌথ কমিশন সভায় উল্লেখ করা হয়েছে।

 

রাষ্ট্রদূত বলেন, ভিশন ২০৩০ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে সৌদি আরব দক্ষ জনশক্তিকেই স্বাগত জানাবে। তাই বাংলাদেশে আমরা আমাদের কর্মীদের প্রয়োজনীয় দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি। এসময় বাংলাদেশি কর্মীরা কঠোর পরিশ্রমী ও তাঁরা সৌদি অর্থনীতির উন্নয়নে ভূমিকা রাখছেন বলে মন্তব্য করেন সৌদি উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলি বিন আব্দুর রহমান আল ইউসুফ। তিনি বাংলাদেশি কর্মীদের সমস্যাগুলো মনোযোগ সহকারে শুনেন ও তা আশু সমাধানের উদ্যোগ নিবেন মর্মে রাষ্ট্রদূতকে অবহিত করেন সৌদি উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

 

মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারি আরো বলেন, বাংলাদেশে সৌদি দূতাবাসে কালচারাল এ্যাটাচে নিয়োগ প্রদানের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন। যাতে বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে আরও বেশি শিক্ষার্থী তাদের কাগজপত্র দ্রুত সত্যায়িত করে সৌদি আরবে আসতে পারে। এছাড়া দক্ষ ও প্রফেশনাল অভিবাসী যারা সৌদি আরবে আসতে ইচ্ছুক তাদের সনদ দ্রুততার সাথে সত্যায়িত করার জন্য সৌদি দূতাবাসে একজন কালচারাল এ্যাটাচে নিয়োগের অনুরোধ জানান রাষ্ট্রদূত।

 

বৈঠকে সৌদি আরবে ২৮ লাখ বাংলাদেশির কর্মসংস্থানের জন্য সৌদি বাদশা সালমান বিন আব্দুল আজিজ এবং যুবরাজ প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমানকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার)।