প্রবাসী কর্মীদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তাসহ বিদেশে কর্মস্থলের ঝুঁকি কমাতে ২০১৯ সালে চালু করা হয় বাধ্যতামুলক জীবন বীমা প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিষ্ঠান ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান জীবন বীমা কর্পোরেশন এই বীমা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে চালুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৩ দফা বীমার শর্ত ও সুবিধায় পরিবর্তন আনা হয়েছে
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো- বিএমইিট থেকে বিদেশগামী কর্মীর নামে ছাড়পত্র বা ক্লিয়ারেন্স নেয়ার সময় অন্যান্য ফি’র সাথে বীমার জন্য ১ হাজার টাকা জমা দেয়া হয় তাই বাধ্যতামূলকভাবে সকল কর্মী এই বীমার আওতায় আসবেন তবে যারা এই বীমা চালুর আগেই বিদেশে গিয়েছেন বা প্রবাসে অবস্থান করছেন তারা আপাতত এই সুবিধা পাচ্ছেন না এবিষয়ে আলোচনা চলছে বলে সম্প্রতি জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্রমসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ
শুরু থেকে যেই ৩ দফা বীমার শর্ত বা সুবিধায় পরিবর্তন আনা হয়েছে, সেবিষয়ে বিস্তারিত থাকছে এই প্রতিবেদনে:
২০১৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর থেকে ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত যারা বিদেশ গিয়েছেন তাঁদের জন্য বীমার মেয়াদ হচ্ছে বিএমইিট স্মার্ট কার্ড (ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স কার্ড) পাওয়ার তারিখ থেকে পরবর্তী ০২ বছর। এক্ষত্রে গ্রাহকের মৃত্যুজনিত কারণে বীমা দাবির অর্থের পরিমান ২ লাখ টাকা।
২০২০ সালের ১১ ডিসেম্বর থেকে ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত যারা বিদেশ গিয়েছেন তাঁদের জন্য বীমার মেয়াদও বিএমইিট স্মার্ট কার্ড পাওয়ার তারিখ থেকে পরবর্তী ০২ বছর। এক্ষত্রে মৃত্যুজনিত কারণে বীমা দাবির অর্থের পরিমান ৪ লাখ টাকা।
আর সবশেষ ২০২৩ সালের ১ পহেলা জানুয়ারি থেকে যারা বিদেশ যাচ্ছেন তাঁদের বীমার মেয়াদ বিএমইিট স্মার্ট কার্ড পাওয়ার তারিখ থেকে পরবর্তী ০৫ বছর। আর এক্ষত্রে মৃত্যুজনিত কারণে বীমা দাবির অর্থের পরিমান ১০ লাখ টাকা।
নতুন এই বীমাচুক্তির মধ্যে একেবারেই নতুন যুক্তকরা হয়েছে ফেরত আসা কর্মীদের সহায়তার বিষয়টি বীমা গ্রহণকারী কর্মী বিদেশে কাজ না পেয়ে বা চাকরিচ্যুত হয়ে অথবা যেকোনো কারণে ০৬ মাসের মধ্যে দেশে ফেরত চলে আসলে, তিনি পাবেন ৫০ হাজার টাকা বীমা সুবিধা।
এছাড়া বীমার আওতায় একজন কর্মী যে সকল সুবিধা পাবেন-
চুক্তির মেয়াদের মধ্যে বীমাকৃত ব্যক্তি মারা গেলে বা সম্পূর্ণ স্থায়ী পঙ্গুত্ব বরণ করলে সম্পূর্ণ বীমার অর্থ পাবেন। এছাড়া আংশিক পঙ্গুত্ব বরণ করলে বীমার একটি নির্দিষ্ট অঙ্ক শতকরা হার হিসেবে পাবেন বীমাকৃত ব্যক্তি।
যে কারনে বীমার শর্ত প্রযোজ্য হবে না-
বীমা গ্রহনের ১২ মাসের মধ্যে আত্নহত্যা বা নিজেই নিজের ক্ষতি করলে এবং এইডস বা এইচনআইভি সম্পর্কিত রোগে সরাসরি মৃত্যু বা অসুস্থ হলে বীমা কৃত ব্যক্তি বীমার অর্থ পাবেন না। সেইসাথে উচ্চঝুঁকিসম্পন্ন খেলা অথবা দঃসাহসিক কার্যকলাপের কারনে মৃত্যু হলে। মদ ও মাদকাশক্তির কারনে মৃত্যু হলে। যুদ্ধ, দাঙ্গা বা সন্ত্রাসী কাজের জন্য মৃত্যু হলে কিংবা গুরুতর অপরাধে আদালতের রায়ে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত হলে বীমা কৃত ব্যক্তি বীমার অর্থ পাবেন না।
এই চুক্তিপত্র কার্যকর থাকাকালীন বিদেশগামী কর্মী অর্থাৎ বীমা গ্রাহক বহির্গমন ছাড়পত্রের তারিখ হতে পরবর্তী ৫ বছরের মধ্যে বিদেশে বা বাংলাদেশে মৃত্যুবরণ করলে বা সম্পূর্ণ বা আংশিক স্থায়ী পঙ্গু হলে সেক্ষেত্রে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড বীমা দাবীর স্বপক্ষে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পরিক্ষা নিরীক্ষা করে জীবন বীমা কর্পোরেশনের কাছে সুপারিশ করবে। আর এই সুপারিশের প্রেক্ষিতে চুক্তি অনুসারে জীবন বীমা কর্পোরেশন দাবীর আর্থিক সুবিধা বাংলাদেশি টাকায় ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডকে পরিশোধ করবে। এরপর কল্যাণ বোর্ড সেই অর্থ বীমাকৃত ব্যক্তি বা তার পরিবারের কাছে তুলে দিবেন।