ঢাকা , রবিবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
বোসেলের মাধ্যমে কর্মী পাঠানোর ভুয়া বিজ্ঞাপন থেকে সাবধান সরকারিভাবে ফিজিতে কর্মী নিয়োগ মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি সাংবাদিককে অপহরণের অভিযোগে পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত মালয়েশিয়ায় নির্মাণাধীন ভবণ ধস, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে কর্তৃপক্ষ মালয়েশিয়ায় নিখোজঁ ৪ বাংলাদেশি আটক, ৩ কর্মীর মৃত্যুতে হাইকমিশনের শোক মালয়েশিয়ায় ভবন ধসে নিহত তিন বাংলাদেশির পরিচয় শনাক্ত লিবিয়া থেকে দেশে ফিরল ১৪৩ বাংলাদেশি, অপেক্ষায় আরও ৩২০ জন মালয়েশিয়ায় ভবন ধসে ৩ বাংলাদেশি কর্মীর মৃত্যু, নিখোজঁ ৪ প্রথমবারের মত তৈরি হচ্ছে বিদেশ ফেরত কর্মীদের তথ্যভান্ডার: প্রবাসী কল্যাণ সচিব বিদেশ ফেরত ২ লাখ কর্মী পাবে ২৭০ কোটি টাকা প্রণোদনা

মালয়েশিয়ায় বেওয়ারিশ হিসেবে বাংলাদেশির লাশ দাফন, প্রবাসীদের ক্ষোভ

Print Friendly, PDF & Email

 

মালয়েশিয়ায় মোহাম্মদ শাওন (৩০) নামের এক বাংলাদেশিকে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়েছে। অথচ ওই বাংলাদেশির ছিল বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসা। কেন বেওয়ারিশ হিসেবে শাওনের লাশ দাফন করা হলো প্রশ্ন ছুড়েছেন প্রবাসীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রবাসী জানান, শাওনের লাশ দাফনের আগেই মিশনের কল্যাণ সহকারী মুকসেদ আলীর হোয়াটসঅ্যাপে শাওনের সব তথ্য পাঠানো হয়েছিল।

বুধবার সকালে হাইকমিশনের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, শাওনের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে মিশনের লিগ্যাল এ্যাডভাইজার হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
দেশে থাকা শাওনের মা শিরিন বেগম জানান, বাংলাদেশ হাইকমিশনে জানানোর পরও কোনো ধরনের সহায়তা করেনি। আমার ছেলের পাসপোর্ট ভিসা থাকার পরও কেন বেওয়ারিশ হিসেবে মালয়েশিয়ায় দাফন হলো। মা হয়ে ছেলের মৃত মুখটাও দেখা হলনা। ৪ ভাইয়ের মধ্যে শাওন ছিলেন সবার ছোট।

শাওনের বড় ভাই মোহাম্মদ শামীম জানান, আমার ভাইয়ের পরিচয় থাকার পরও দেশে না পাঠিয়ে বেওয়ারিশ হিসেবে তাকে দাফন করা হলো, তার সঠিক বিচার দাবী করেন শামীম।

কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দির গৌরীপুরের হাটচান্দিনা গ্রামের মোহাম্মদ আবু তাহেরের ছেলে মোহাম্মদ শাওন (৩০), ২০১৫ সালে মালয়েশিয়া কাজের উদ্দেশ্যে যান। গত বছরের ২৭ আগস্ট নিজ কর্মস্থল রেখে স্থানীয় এক চীনা নাগরিকের ডাকে কাজ করতে গিয়ে ৫ তলা ভবন থেকে পড়ে গুরুতর আহত হলে ঘটনাস্থল থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাকে উদ্ধার করে কুয়ালালামপুর হাসপাতালে ভর্তি করেন।

তিন মাস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৩ মার্চ আইসিইউতেই মৃত্যু হয়। ১৫ এপ্রিল বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে দাফন করা হয় শাওনকে। এদিকে ব্যক্তিগত কাজে গিয়ে আহত হওয়ায় এর দায় নেয়নি শাওনের কোম্পানি।

খোজঁ নিয়ে জানা গেছে, হাসপাতালে ৮১ হাজার ৭৪৩ রিঙ্গিত বিলের মধ্যে ২২ হাজার ইন্স্যুরেন্স এবং প্রবাসীদের সহযোগিতায় ৯ হাজার রিঙ্গিতসহ মোট ৩১ হাজার রিঙ্গিত হাসপাতালের বিল পরিশোধ করা হয়।

একটি সুত্রে জানা গেছে, মালয়েশিয়ার হাসপাতালে কোনো বিদেশি নাগরিকের চিকিৎসাবস্থায় মৃত্যু হলে হাসপাতালের বকেয়া বিল পরিশোধ না করা পর্যন্ত মৃতদেহ হস্তান্তর করা হয়না। হাসপাতালের বকেয়া বিল এবং পরিচয় থাকা সত্বেও কেন শাওনের লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হলো এমন প্রশ্ন সচেতন প্রবাসীদের।

জানা গেছে, মোহাম্মদ শাওন মালয়েশিয়া বিএনপির একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন এবং মালয়েশিয়া জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা জাসাসের প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ন আহবায়ক ছিলেন। দুর্ঘটনায় আহত হওয়া এবং মৃত্যুর পরেও নিজ দলের নেতাদের কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা পায়নি শাওন। বরং দলের শীর্ষ নেতারা শাওনের বিষয়ে একে অন্যেকে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ করছেন। এতে দলের কর্মীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে এমনটি জানালেন দলের একজন সক্রিয় কর্মী।

Tag :

বোসেলের মাধ্যমে কর্মী পাঠানোর ভুয়া বিজ্ঞাপন থেকে সাবধান

মালয়েশিয়ায় বেওয়ারিশ হিসেবে বাংলাদেশির লাশ দাফন, প্রবাসীদের ক্ষোভ

আপডেট: ০৫:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ মে ২০২৩
Print Friendly, PDF & Email

 

মালয়েশিয়ায় মোহাম্মদ শাওন (৩০) নামের এক বাংলাদেশিকে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়েছে। অথচ ওই বাংলাদেশির ছিল বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসা। কেন বেওয়ারিশ হিসেবে শাওনের লাশ দাফন করা হলো প্রশ্ন ছুড়েছেন প্রবাসীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রবাসী জানান, শাওনের লাশ দাফনের আগেই মিশনের কল্যাণ সহকারী মুকসেদ আলীর হোয়াটসঅ্যাপে শাওনের সব তথ্য পাঠানো হয়েছিল।

বুধবার সকালে হাইকমিশনের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, শাওনের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে মিশনের লিগ্যাল এ্যাডভাইজার হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
দেশে থাকা শাওনের মা শিরিন বেগম জানান, বাংলাদেশ হাইকমিশনে জানানোর পরও কোনো ধরনের সহায়তা করেনি। আমার ছেলের পাসপোর্ট ভিসা থাকার পরও কেন বেওয়ারিশ হিসেবে মালয়েশিয়ায় দাফন হলো। মা হয়ে ছেলের মৃত মুখটাও দেখা হলনা। ৪ ভাইয়ের মধ্যে শাওন ছিলেন সবার ছোট।

শাওনের বড় ভাই মোহাম্মদ শামীম জানান, আমার ভাইয়ের পরিচয় থাকার পরও দেশে না পাঠিয়ে বেওয়ারিশ হিসেবে তাকে দাফন করা হলো, তার সঠিক বিচার দাবী করেন শামীম।

কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দির গৌরীপুরের হাটচান্দিনা গ্রামের মোহাম্মদ আবু তাহেরের ছেলে মোহাম্মদ শাওন (৩০), ২০১৫ সালে মালয়েশিয়া কাজের উদ্দেশ্যে যান। গত বছরের ২৭ আগস্ট নিজ কর্মস্থল রেখে স্থানীয় এক চীনা নাগরিকের ডাকে কাজ করতে গিয়ে ৫ তলা ভবন থেকে পড়ে গুরুতর আহত হলে ঘটনাস্থল থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাকে উদ্ধার করে কুয়ালালামপুর হাসপাতালে ভর্তি করেন।

তিন মাস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৩ মার্চ আইসিইউতেই মৃত্যু হয়। ১৫ এপ্রিল বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে দাফন করা হয় শাওনকে। এদিকে ব্যক্তিগত কাজে গিয়ে আহত হওয়ায় এর দায় নেয়নি শাওনের কোম্পানি।

খোজঁ নিয়ে জানা গেছে, হাসপাতালে ৮১ হাজার ৭৪৩ রিঙ্গিত বিলের মধ্যে ২২ হাজার ইন্স্যুরেন্স এবং প্রবাসীদের সহযোগিতায় ৯ হাজার রিঙ্গিতসহ মোট ৩১ হাজার রিঙ্গিত হাসপাতালের বিল পরিশোধ করা হয়।

একটি সুত্রে জানা গেছে, মালয়েশিয়ার হাসপাতালে কোনো বিদেশি নাগরিকের চিকিৎসাবস্থায় মৃত্যু হলে হাসপাতালের বকেয়া বিল পরিশোধ না করা পর্যন্ত মৃতদেহ হস্তান্তর করা হয়না। হাসপাতালের বকেয়া বিল এবং পরিচয় থাকা সত্বেও কেন শাওনের লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হলো এমন প্রশ্ন সচেতন প্রবাসীদের।

জানা গেছে, মোহাম্মদ শাওন মালয়েশিয়া বিএনপির একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন এবং মালয়েশিয়া জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা জাসাসের প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ন আহবায়ক ছিলেন। দুর্ঘটনায় আহত হওয়া এবং মৃত্যুর পরেও নিজ দলের নেতাদের কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা পায়নি শাওন। বরং দলের শীর্ষ নেতারা শাওনের বিষয়ে একে অন্যেকে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ করছেন। এতে দলের কর্মীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে এমনটি জানালেন দলের একজন সক্রিয় কর্মী।