ঢাকা , শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৬ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :

মালয়েশিয়ায় কর্মীর অভাব দেশটির জিডিপিকে প্রভাবিত করবে: এফএমএম

Print Friendly, PDF & Email

 

মালয়েশিয়ায় বিদেশি কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া স্থগিত করায় দেশের উৎপাদনশীলতায় বিরূপ প্রভাব পড়বে এবং জিডিপি কমে যাবে বলে দাবি করেছে দেশটির বৃহত্তর ফেডারেশন অব মালয়েশিয়ান ম্যানুফ্যাকচারার এর সভাপতি সো থিয়ান লাই।

তিনি বলেন, “বিদেশি কর্মীর অভাবে ক্ষুদ্র ও মাঝারি এন্টারপ্রাইজ ( এস এম ই) খাত ক্ষতির সম্মুখীন হবে। যারা কেবল মাত্র উতপাদন ও বিক্রি শুরু করেছিল। এর ফলে কোম্পানিগুলো পণ্য সরবরাহের আদেশ পূরণ করতে পারবে না। বিশেষ করে রপ্তানি আদেশ।”

তবে উৎপাদন বাড়ানোর জন্য এফএমএমএর এই দাবীকে ‘ অতিরঞ্জন ‘ বলেছেন মালয়েশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স এন্ড টেকনোলজির অর্থনীতির অধ্যাপক অর্থনীতিবিদ জিওফ্রে উইলিয়ামস।

এ অর্থনীতিবিদ ফেডারেশন অফ মালয়েশিয়ান ম্যানুফ্যাকচারার্সের (এফএমএম) বিদেশি কর্মী সংক্রান্ত দাবিকে বাতিলই করেছেন। তিনি বলেন, মালয়েশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ( জিডিপি) সহযোগিতা করার জন্য পর্যাপ্ত বিদেশি কর্মী আছে। এ অর্থনীতিবিদের হিসাবে এখন পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় ১৫ লক্ষ বৈধ বিদেশি কর্মী আছে।

তিনি বলেন, “এই স্থগিত করার কোন প্রতিক্রিয়া প্রবৃদ্ধিতে ও উৎপাদনে প্রভাব পরবে না। কারণ প্রকৃতপক্ষে অনেক বিদেশি ও রিফিউজি এখানে কাজ করে এবং অবস্থান করে তবে তা অবৈধভাবে”।

তিনি আরো বলেন, প্রায় ১৫ লক্ষ বৈধ বিদেশি কর্মী আছে এবং সরকারের বৈধকরণ কর্মসূচির আওতায় আরো ৩ লক্ষ ৮০ হাজার বিদেশি অবৈধ কর্মী বৈধ হওয়ার লাইনে আছে। এর আগে এই কর্মসূচি ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত চলছিল তখন ৪ লক্ষ ১০ হাজার অবৈধ বিদেশি কর্মী নাম নিবন্ধন করেছিল।

মালয়েশিয়ায় উচ্চ বেকারত্ব আছে, প্রায় ১০ লক্ষ লোক কর্মসংস্থানহীন আছে, কর্ম পেতে যাচ্ছে বা কাজের বাইরে আছে। ” তারা কাজে জড়িত হবে যদি বেতন বৃদ্ধি করা হয়, সুতরাং কর্মীর বা শ্রমিকের কোন ঘাটতি নেই। যদি সঠিকভাবে ব্যাবস্থা করা যায় তাহলে উৎপাদন বাড়বে এবং জিডিপি বৃদ্ধি পাবে।”

অপর দিকে ইউনিভার্সিটি মালায়ার নাজারি ইসমাইল এফএমএম- এর সাথে একমত পোষণ করে বলেন যে, উৎপাদকদের প্রতিযোগিতামূলক রপ্তানি বাজারে টিকে থাকার জন্য সস্থা শ্রমিক দরকার। তিনি বলেন, ” ঋণগ্রস্ত উৎপাদকদের মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা তাদের খরচ কমানোর জন্য বাধ্য করে, এবং খরচ কমানোর সবচেয়ে সহজ উপায় হল সস্তা শ্রম ব্যবহার করা,”। নাজারী বলেন, উৎপাদক কোম্পানি যদি ক্রেতার অর্ডার পূরণ করতে না পারে তাহলে দীর্ঘমেয়াদে তাদের ( উৎপাদক) সুনামের ক্ষতি হবে এবং রাজস্ব কমে যাবে।” ফলে বিদেশি ক্রেতারা অন্য দেশ থেকে পণ্য নিবে আর আমাদের ( মালয়েশিয়ার) অর্থনীতি আসলেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”

তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, বিদেশি কর্মী নিয়োগের বিদ্যমান স্থগিতাদেশ মেয়াদ দীর্ঘ হলে এসএমই খাত মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কর্মীর অভাবে এসএমই নিয়ে যে পরিকল্পনা করা হয়েছে সেগুলো অর্জন করা জটিল হবে।

উল্লেখ্য, ১৮ মার্চ মানব সম্পদ মন্ত্রী ভি শিবকুমার ঘোষনা করেন যে, সকল আবেদন এবং বিদেশি কর্মীর রিক্রুটিং প্রকৃয়া পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। শিবকুমার বলেন নিয়োগকর্তাদের ৯ লক্ষ ৯৫ হাজার ৩ শ ছিয়ানব্বই জন বিদেশি কর্মীদের আনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কেবল নিয়োগকর্তা অনুমোদিত কর্মীদের মালয়েশিয়ায় আনা নিশ্চিত করলে তবেই স্থগিতাদেশ পর্যালোচনা করা হবে ।

Tag :
জনপ্রিয়

মালয়েশিয়ায় মৃত্যুদন্ড থেকে রেহাই পেলেন বাংলাদেশি

মালয়েশিয়ায় কর্মীর অভাব দেশটির জিডিপিকে প্রভাবিত করবে: এফএমএম

আপডেট: ০৯:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৩
Print Friendly, PDF & Email

 

মালয়েশিয়ায় বিদেশি কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া স্থগিত করায় দেশের উৎপাদনশীলতায় বিরূপ প্রভাব পড়বে এবং জিডিপি কমে যাবে বলে দাবি করেছে দেশটির বৃহত্তর ফেডারেশন অব মালয়েশিয়ান ম্যানুফ্যাকচারার এর সভাপতি সো থিয়ান লাই।

তিনি বলেন, “বিদেশি কর্মীর অভাবে ক্ষুদ্র ও মাঝারি এন্টারপ্রাইজ ( এস এম ই) খাত ক্ষতির সম্মুখীন হবে। যারা কেবল মাত্র উতপাদন ও বিক্রি শুরু করেছিল। এর ফলে কোম্পানিগুলো পণ্য সরবরাহের আদেশ পূরণ করতে পারবে না। বিশেষ করে রপ্তানি আদেশ।”

তবে উৎপাদন বাড়ানোর জন্য এফএমএমএর এই দাবীকে ‘ অতিরঞ্জন ‘ বলেছেন মালয়েশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স এন্ড টেকনোলজির অর্থনীতির অধ্যাপক অর্থনীতিবিদ জিওফ্রে উইলিয়ামস।

এ অর্থনীতিবিদ ফেডারেশন অফ মালয়েশিয়ান ম্যানুফ্যাকচারার্সের (এফএমএম) বিদেশি কর্মী সংক্রান্ত দাবিকে বাতিলই করেছেন। তিনি বলেন, মালয়েশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ( জিডিপি) সহযোগিতা করার জন্য পর্যাপ্ত বিদেশি কর্মী আছে। এ অর্থনীতিবিদের হিসাবে এখন পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় ১৫ লক্ষ বৈধ বিদেশি কর্মী আছে।

তিনি বলেন, “এই স্থগিত করার কোন প্রতিক্রিয়া প্রবৃদ্ধিতে ও উৎপাদনে প্রভাব পরবে না। কারণ প্রকৃতপক্ষে অনেক বিদেশি ও রিফিউজি এখানে কাজ করে এবং অবস্থান করে তবে তা অবৈধভাবে”।

তিনি আরো বলেন, প্রায় ১৫ লক্ষ বৈধ বিদেশি কর্মী আছে এবং সরকারের বৈধকরণ কর্মসূচির আওতায় আরো ৩ লক্ষ ৮০ হাজার বিদেশি অবৈধ কর্মী বৈধ হওয়ার লাইনে আছে। এর আগে এই কর্মসূচি ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত চলছিল তখন ৪ লক্ষ ১০ হাজার অবৈধ বিদেশি কর্মী নাম নিবন্ধন করেছিল।

মালয়েশিয়ায় উচ্চ বেকারত্ব আছে, প্রায় ১০ লক্ষ লোক কর্মসংস্থানহীন আছে, কর্ম পেতে যাচ্ছে বা কাজের বাইরে আছে। ” তারা কাজে জড়িত হবে যদি বেতন বৃদ্ধি করা হয়, সুতরাং কর্মীর বা শ্রমিকের কোন ঘাটতি নেই। যদি সঠিকভাবে ব্যাবস্থা করা যায় তাহলে উৎপাদন বাড়বে এবং জিডিপি বৃদ্ধি পাবে।”

অপর দিকে ইউনিভার্সিটি মালায়ার নাজারি ইসমাইল এফএমএম- এর সাথে একমত পোষণ করে বলেন যে, উৎপাদকদের প্রতিযোগিতামূলক রপ্তানি বাজারে টিকে থাকার জন্য সস্থা শ্রমিক দরকার। তিনি বলেন, ” ঋণগ্রস্ত উৎপাদকদের মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা তাদের খরচ কমানোর জন্য বাধ্য করে, এবং খরচ কমানোর সবচেয়ে সহজ উপায় হল সস্তা শ্রম ব্যবহার করা,”। নাজারী বলেন, উৎপাদক কোম্পানি যদি ক্রেতার অর্ডার পূরণ করতে না পারে তাহলে দীর্ঘমেয়াদে তাদের ( উৎপাদক) সুনামের ক্ষতি হবে এবং রাজস্ব কমে যাবে।” ফলে বিদেশি ক্রেতারা অন্য দেশ থেকে পণ্য নিবে আর আমাদের ( মালয়েশিয়ার) অর্থনীতি আসলেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”

তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, বিদেশি কর্মী নিয়োগের বিদ্যমান স্থগিতাদেশ মেয়াদ দীর্ঘ হলে এসএমই খাত মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কর্মীর অভাবে এসএমই নিয়ে যে পরিকল্পনা করা হয়েছে সেগুলো অর্জন করা জটিল হবে।

উল্লেখ্য, ১৮ মার্চ মানব সম্পদ মন্ত্রী ভি শিবকুমার ঘোষনা করেন যে, সকল আবেদন এবং বিদেশি কর্মীর রিক্রুটিং প্রকৃয়া পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। শিবকুমার বলেন নিয়োগকর্তাদের ৯ লক্ষ ৯৫ হাজার ৩ শ ছিয়ানব্বই জন বিদেশি কর্মীদের আনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কেবল নিয়োগকর্তা অনুমোদিত কর্মীদের মালয়েশিয়ায় আনা নিশ্চিত করলে তবেই স্থগিতাদেশ পর্যালোচনা করা হবে ।