চলতি বছরের হজ ফ্লাইট আগামী ২১ মে থেকে শুরু হবে বলে জানিয়েছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান। এছাড়া হজযাত্রী কোটা পূরণ না হলেও নিবন্ধনের সুযোগ আর বাড়বে না বলে জানান তিনি।
বুধবার (২৬ এপ্রিল) সচিবালয়ে হজ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ‘ই-হজ বিডি’ নামক মোবাইল অ্যাপ উদ্বোধন এবং হজ ও ওমরা সহায়িকার মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এসব কথা জানান ধর্ম প্রতিমন্ত্রী।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, “হজের তিন হাজার কোটা ফাঁকা রেখেই সব প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। কোটা ফাঁকা থাকা কোনও সমস্যা নয়। ৯ দফা সময় বাড়িয়ে গতকাল মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) শেষ হয়েছে হজ নিবন্ধন। এখন হাতে আর কোনও সময় নেই। তাই কোটা পূরণ না হলেও এ বছর হজ নিবন্ধনের সময় আর বাড়ছে না।”
ফরিদুল হক খান বলেন, “বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব মুসলিম দেশগুলোর ওপর পড়েছে। ফলে পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ভারত থেকেও হজযাত্রী যাওয়ার সংখ্যা কমে গেছে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের হজযাত্রীর সংখ্যা অন্যান্য দেশের চেয়ে ভালো। তারপরও বাংলাদেশের মানুষের আর্থিক সক্ষমতা ভালো হওয়ায় ১ লাখ ২০ হাজারের মতো হজযাত্রী চূড়ান্ত নিবন্ধন করেছেন।”
হজ নিবন্ধন সহজ করতে ‘ই-হজ বিডি’ অ্যাপের উদ্বোধন করা হয়েছে জানিয়ে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, “এখন থেকে হজ ও ওমরার সব সেবা ই-হজ মোবাইল অ্যাপে হবে। ঘরে বসেই হজ-ওমরার সব কার্যক্রম অ্যাপের মাধ্যমে সম্পন্ন করা যাবে।”
ফরিদুল হক খান বলেন, “অ্যাপটি বিনামূল্যে তৈরি হয়েছে। যে প্রতিষ্ঠান হজের সব রকম ই-সেবা দেয়, সেই প্রতিষ্ঠান বিজনেস অটোমেশন লিমিটেড বিনামূল্যে তৈরি করে দেয়। এই অ্যাপের সব তথ্য মন্ত্রণালয়ে থাকবে বলেও জানান তিনি।”
অনুষ্ঠানেহজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, “বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় কোটা পূরণ হয়ে গিয়েছে। তিন থেকে সাড়ে তিন হাজারের মতো কোটা খালি থাকতে পারে। শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর অনেক দেশই কোটা পূরণ করতে পারবে না।”
অ্যাপ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সচিব (হজ) মো. মতিউল ইসলাম, হজ অফিসের পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম।
এ বছর হজে যেতে হজযাত্রী নিবন্ধন শুরু হয় গত ৮ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত সাড়া না পাওয়ায় আট দফা হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় বাড়ায় সরকার। হজ নিবন্ধনের জন্য সময় বাড়িয়েও সম্ভাব্য হজযাত্রীদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সংখ্যায় সাড়া না পাওয়া যায়নি। সর্বশেষ ২৫ এপ্রিল দেওয়া হয় একদিনের বিশেষ সুযোগ। এই এক দিনে সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজের জন্য নিবন্ধন করেছেন ৩৯ জন। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধন করেছেন ৭৫৭ জন।
সৌদি আরবের সঙ্গে হজচুক্তি অনুযায়ী, এবার বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার জন ও বাকি ১ লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ করার সুযোগ পাবেন। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের ২৭ জুন (৯ জিলহ্জ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।