ঢাকা , শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৬ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :

প্রবাসীদের কল্যাণে বাজেট বৃদ্ধির আহবান জানাল “ককাস”

Print Friendly, PDF & Email

 

অভিবাসন প্রত্যাশী কিংবা প্রবাস ফেরত কর্মীদের কল্যাণে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে সংশ্লিষ্ট খাতে বাজেট বৃদ্ধির  আহবান জানিয়েছেন পার্লামেন্টারিয়ান্স ককাস সদস্যরা।

সোমবার (১০ এপ্রিল) রাজধানীর ইস্কাটনে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে “বাংলাদেশ পার্লামেন্টারিয়ান্স ককাস অন মাইগ্রান্টস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট” আয়োজিত ‘অভিবাসীদের কল্যাণে ২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রাক-বাজেট সংলাপ’ সভায় এই আহবান জানান তারা।

অভিবাসী কর্মীদের কল্যাণে সংশ্লিষ্ট খাতে বাজেট বৃদ্ধি ও কোন কোন সেক্টরে কি পরিমান অর্থ বরাদ্দ রাখা প্রয়োজন তা রিসার্চ কিংবা গবেষনার জন্য পার্লামেন্টারিয়ান্স ককাসের পক্ষ থেকে দায়িত্ব দেয়া হয় সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ বা সিপিডি’র উপর। অভিবাসীদের কল্যাণে বাজেট সংলাপ’ সভায় পার্লামেন্টারিয়ান্স কওকাসের পক্ষ ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের বাজেটের একটি খসরা প্রস্তাবনা তুলে ধরেন সিপিডি’র রিসার্চ ডিরেক্টর ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

সিপিডি’র গবেষনা বলছে, “২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের বাজেট ছিলো ৯৯০ কোটি টাকা। যা প্রবাসীদের কল্যাণে গৃহীত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের তুলনায় পর্যাপ্ত নয়।” তাই বাজেট ঘাটতির এই সমস্যা সমাধানে আগামী বাজেট বৃদ্ধি করে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা করার তাগিদ দেন পার্লামেন্টারিয়ান্স ককাস সদস্যরা।

সভায় বাজেটের খসরা প্রস্তাবনা তুলে ধরে পার্লামেন্টারিয়ান্স ককাস থেকে জানানো হয়, “এই দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি হলো প্রবাস আয় বা রেমিট্যান্স। তাই একজন অভিবাসন প্রত্যাশী বিদেশ যাবার আগে এবং বিদেশ যাওয়ার পরে কি কি সমস্যায় পড়ছে সেগুলো নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে।” এজন্য শ্রম মন্ত্রণায়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রোনালয়কে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে বলেও সভায় জানান ককাস সদস্যরা।

তবে অভিবাসীদের কল্যাণে বাজেট ঘাটতিই একমাত্র সমস্যা না বলে সভায় জানান প্রবাসী কল্যাণ সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন। তিনি বলেন, “বাজেট ঘাটতি একমাত্র সমস্যা না। তবে এটাকে সমস্যা না ভাবলে সমাধানও আসবে না। বাজেটের বাইরেও যে সকল সমস্যা আছে সেগুলো নিয়ে আরো ভাবতে হবে।”

প্রবাসী কল্যাণ সচিব জানান, “ইন্ডিয়ার ২কোটি মাইগ্রেন্ট তাঁদের দেশে রেমিট্যান্স পাঠায় ১’শ বিলিয়ন ডলার। সেখানে বাংলাদেশি সোয়া কোটি মাইগ্রেন্ট দেশে যে পরিমান রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছে তা ইন্ডিয়ার তুলোনায় আনুপাতিক হাড় অনেক কম। এর কারণ হলো স্কিল্ড ওয়ার্কার।” তাই বিদেশে অধিক কর্মী প্রেরনের দিকে ফোকাস বেশী না দিয়ে দক্ষ কর্মী তৈরীতে মনোযোগ দিতে হবে বলেও জানান প্রবাসী কল্যাণ সচিব।

সভায় ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন আরো বলেন, “বাজেটে আমরা চাইতে পারি, তবে সেটা যুক্তিসঙ্গত হতে হবে। এর জন্য সরকারকে দোষারোপ করা যাবে না। প্রবাস খাতকে এখনো আমাদের দেশে নেগেটিভভাবে উপস্থাপন করা হয়। এটা আমাদের পরিবর্বতন করতে হবে। যারা বিদেশে মাইগ্রেন্ট পাঠাতে কাজ করছে তাঁদের আদম ব্যবসায়ী বলে কটাক্ষ করা যাবে না।”

তিনি আরো বলেন, প্রবাসী আয় ছাড়া দেশ চলতে পারবে না এটা আমি বিশ্বাস করিনা, এই দেশের অর্থনীতিতে একজন কৃষকেরও অবদান আছে, অবদান আছে একজন গার্মেন্টস কর্মীরও। এজন্য আমাদের একজনের সাথে অন্যজনের তুলনা করা যাবেনা। সবার জায়গায় থেকে সবার অবদান মূল্যায়ন করতে হবে।”

ককাসের সাধারন সম্পাদক মাহজাবীন খালেদ’র সঞ্চালনায় অভিবাসীদের কল্যাণে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রাক-বাজেট সংলাপ’ সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, ককাসের চেয়ারপার্সন ব্যরিষ্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারি (এমপি), ককাসের সদস্য আহসান আদিলুর রহমান (এমপি), তানভীর শাকিল জয় (এমপি), জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষন ব্যুরো বা বিএমইটি মহাপরিচালক শহীদুল আলম এনডিসি, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক হামিদুর রহমান, বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিঃ (বোয়েসেল) এর মহাপরিচালক ড. মল্লিক আনোয়ার এবং রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট (রামরু) এর নির্বাহী পরিচালক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার’সহ খাত সংশ্লিষ্ট সরকারি অন্যান্য কর্মকর্তারা।

Tag :
জনপ্রিয়

মালয়েশিয়ায় মৃত্যুদন্ড থেকে রেহাই পেলেন বাংলাদেশি

প্রবাসীদের কল্যাণে বাজেট বৃদ্ধির আহবান জানাল “ককাস”

আপডেট: ০৪:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ এপ্রিল ২০২৩
Print Friendly, PDF & Email

 

অভিবাসন প্রত্যাশী কিংবা প্রবাস ফেরত কর্মীদের কল্যাণে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে সংশ্লিষ্ট খাতে বাজেট বৃদ্ধির  আহবান জানিয়েছেন পার্লামেন্টারিয়ান্স ককাস সদস্যরা।

সোমবার (১০ এপ্রিল) রাজধানীর ইস্কাটনে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে “বাংলাদেশ পার্লামেন্টারিয়ান্স ককাস অন মাইগ্রান্টস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট” আয়োজিত ‘অভিবাসীদের কল্যাণে ২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রাক-বাজেট সংলাপ’ সভায় এই আহবান জানান তারা।

অভিবাসী কর্মীদের কল্যাণে সংশ্লিষ্ট খাতে বাজেট বৃদ্ধি ও কোন কোন সেক্টরে কি পরিমান অর্থ বরাদ্দ রাখা প্রয়োজন তা রিসার্চ কিংবা গবেষনার জন্য পার্লামেন্টারিয়ান্স ককাসের পক্ষ থেকে দায়িত্ব দেয়া হয় সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ বা সিপিডি’র উপর। অভিবাসীদের কল্যাণে বাজেট সংলাপ’ সভায় পার্লামেন্টারিয়ান্স কওকাসের পক্ষ ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের বাজেটের একটি খসরা প্রস্তাবনা তুলে ধরেন সিপিডি’র রিসার্চ ডিরেক্টর ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

সিপিডি’র গবেষনা বলছে, “২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের বাজেট ছিলো ৯৯০ কোটি টাকা। যা প্রবাসীদের কল্যাণে গৃহীত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের তুলনায় পর্যাপ্ত নয়।” তাই বাজেট ঘাটতির এই সমস্যা সমাধানে আগামী বাজেট বৃদ্ধি করে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা করার তাগিদ দেন পার্লামেন্টারিয়ান্স ককাস সদস্যরা।

সভায় বাজেটের খসরা প্রস্তাবনা তুলে ধরে পার্লামেন্টারিয়ান্স ককাস থেকে জানানো হয়, “এই দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি হলো প্রবাস আয় বা রেমিট্যান্স। তাই একজন অভিবাসন প্রত্যাশী বিদেশ যাবার আগে এবং বিদেশ যাওয়ার পরে কি কি সমস্যায় পড়ছে সেগুলো নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে।” এজন্য শ্রম মন্ত্রণায়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রোনালয়কে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে বলেও সভায় জানান ককাস সদস্যরা।

তবে অভিবাসীদের কল্যাণে বাজেট ঘাটতিই একমাত্র সমস্যা না বলে সভায় জানান প্রবাসী কল্যাণ সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন। তিনি বলেন, “বাজেট ঘাটতি একমাত্র সমস্যা না। তবে এটাকে সমস্যা না ভাবলে সমাধানও আসবে না। বাজেটের বাইরেও যে সকল সমস্যা আছে সেগুলো নিয়ে আরো ভাবতে হবে।”

প্রবাসী কল্যাণ সচিব জানান, “ইন্ডিয়ার ২কোটি মাইগ্রেন্ট তাঁদের দেশে রেমিট্যান্স পাঠায় ১’শ বিলিয়ন ডলার। সেখানে বাংলাদেশি সোয়া কোটি মাইগ্রেন্ট দেশে যে পরিমান রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছে তা ইন্ডিয়ার তুলোনায় আনুপাতিক হাড় অনেক কম। এর কারণ হলো স্কিল্ড ওয়ার্কার।” তাই বিদেশে অধিক কর্মী প্রেরনের দিকে ফোকাস বেশী না দিয়ে দক্ষ কর্মী তৈরীতে মনোযোগ দিতে হবে বলেও জানান প্রবাসী কল্যাণ সচিব।

সভায় ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন আরো বলেন, “বাজেটে আমরা চাইতে পারি, তবে সেটা যুক্তিসঙ্গত হতে হবে। এর জন্য সরকারকে দোষারোপ করা যাবে না। প্রবাস খাতকে এখনো আমাদের দেশে নেগেটিভভাবে উপস্থাপন করা হয়। এটা আমাদের পরিবর্বতন করতে হবে। যারা বিদেশে মাইগ্রেন্ট পাঠাতে কাজ করছে তাঁদের আদম ব্যবসায়ী বলে কটাক্ষ করা যাবে না।”

তিনি আরো বলেন, প্রবাসী আয় ছাড়া দেশ চলতে পারবে না এটা আমি বিশ্বাস করিনা, এই দেশের অর্থনীতিতে একজন কৃষকেরও অবদান আছে, অবদান আছে একজন গার্মেন্টস কর্মীরও। এজন্য আমাদের একজনের সাথে অন্যজনের তুলনা করা যাবেনা। সবার জায়গায় থেকে সবার অবদান মূল্যায়ন করতে হবে।”

ককাসের সাধারন সম্পাদক মাহজাবীন খালেদ’র সঞ্চালনায় অভিবাসীদের কল্যাণে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রাক-বাজেট সংলাপ’ সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, ককাসের চেয়ারপার্সন ব্যরিষ্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারি (এমপি), ককাসের সদস্য আহসান আদিলুর রহমান (এমপি), তানভীর শাকিল জয় (এমপি), জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষন ব্যুরো বা বিএমইটি মহাপরিচালক শহীদুল আলম এনডিসি, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক হামিদুর রহমান, বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিঃ (বোয়েসেল) এর মহাপরিচালক ড. মল্লিক আনোয়ার এবং রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট (রামরু) এর নির্বাহী পরিচালক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার’সহ খাত সংশ্লিষ্ট সরকারি অন্যান্য কর্মকর্তারা।