ঢাকা , শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৬ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :

মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাঙালিদের ইফতার

Print Friendly, PDF & Email

 

মুসলিম উম্মাহর সবচেয়ে মহিমান্বিত মাস হলো ‘রমজান’ মাস। শেষ হলো রহমতের ১০ দিন। শুরু হলো মাগফেরাতের ১০ দিন। আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় বিশ্বের সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমান নিজেদের পবিত্র রেখে পুরো মাস সিয়াম সাধনা করেন। মালয়েশিয়ায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরাও সারাদিন কঠিন কাজ করার পরও রোজা রাখছেন। সিয়াম পালন করার পর প্রবাসীরা হোটেল রেস্তোরাঁয়, কাজের সাইডে বা বাসায় বাঙালিয়ানা আতিথিয়েতায় ইফতারের আয়োজন করছেন।

ইফতারের সময় বাংলাদেশিরা যারা যেখানেই থাকেন-কাজ করেন, সেখানেই বিভিন্ন প্রকারের হাতে বানানো পিঠা, হালুয়া, সাদা ভাত, বিরিয়ানি, ছোলা, মুড়ি, পেঁয়াজু, বেগুনি, মরিচা, আলুচপ, জিলাপি, হালিম, খেঁজুর, আম, তরমুজ, কলা, পেপে, আপেল, আঙ্গুর, অরেঞ্জ ও মালয়েশিয়ানসহ বিবিধ খাবার দিয়ে একসঙ্গে ইফতার করেন। প্রবাস জীবনের ইফতারকে ঘিরে রয়েছে তাদের অনেক সুখ-দুঃখের কথা।

প্রবাসী মো. আমির হোসেন বলেন, “সত্যিই প্রবাস জীবনে এটিই ছিল অনেক আনন্দের ইফতার। দুইজন প্রবাসী বাংলাদেশি বন্ধুকে নিয়ে কাজের ফাকেঁ একসঙ্গে ইফতার করলাম। তবে এই আনন্দের মাঝেও দেশে থাকা পরিবারের সবাইকে অনেক মিস করছি। তাদের সঙ্গে মজা করে ইফতার করার যে সুখ, তা কোনোদিনও প্রবাস জীবনে হবে না।”

আমির হোসেন বলেন, “পবিত্র মাসে রোজা পালনের কিছু লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য রয়েছে। এগুলো হলো আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন, তাকওয়া অর্জন, জান্নাতের আশা, পাপ থেকে দূরে থাকা, আল্লাহর সঙ্গে গভীর সম্পর্ক স্থাপন করা, গুনাহ থেকে মার্জনা লাভ করা, জ্ঞান অর্জন, বিনয় ও নম্রতা শিক্ষা, আত্মিক শক্তি বৃদ্ধির ওপরে আধ্যাত্মিকতাকে প্রাধান্য দেয়া, আধ্যাত্মিক শক্তিকে বৃদ্ধি করা, সৎকাজে অগ্রগামী হওয়া, সৎকাজে নিজেকে অভ্যস্ত করে তোলা, সততা অর্জন, আকাঙ্ক্ষা ও লোভ-লালসা কমানো, নিজেকে অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখা এবং অপ্রয়োজনীয় ও অশলীল কর্মকান্ড ও কথা থেকে বিরত থাকা। আর এসব লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে আমাদেরকে অবশ্যই সব ধরনের বদ অভ্যাস, নেশা বাদ দিতে হবে। রমজানে যেহেতু রোজাদার ব্যক্তিগণ নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলেন, তাই তাদের পক্ষে এসব খারাপ কিছু বাদ দেয়া সহজ।”

রবিবার (২ এপ্রিল)  ইফতারের আগে কথা হয় কাওসার আহমদ নামে এক প্রবাসীর সঙ্গে। কাওসার বললেন, “ইফতার সামনে নিয়ে বসতেই দেশে থাকা বাবা-মা, ভাই-বোনসহ পরিবারের সবার কথা স্মরণ হয়ে যায়। প্রবাসে রোজার ইফতার করলেও মন পড়ে থাকে দেশে। পরিবারের সবাই কী দিয়ে ইফতার করছেন, দেশে থাকতে ঠিক এসময় বাবা বাইরে থেকে কত কিছু নিয়ে আসতেন, মা অনেক যত্ন করে ইফতার পরিবেশন করতেন, এগুলো মনে পড়ে। এখন প্রবাসে ইফতার নিয়ে বসে খুঁজে বেড়াই তাদের। মা-বাবা, ভাই-বোনকে আমি অনেক মিছ করছি।”

প্রবাসী ইমরান আদ বললেন, “দেশে থাকতে এলাকার তরুণদের নিয়ে ইফতারের আয়োজন করতাম। আজ মনে পড়ে গেল সেই স্মৃতি। প্রবাসে এসে সবাইকে মিস করছি।”

Tag :
জনপ্রিয়

মালয়েশিয়ায় মৃত্যুদন্ড থেকে রেহাই পেলেন বাংলাদেশি

মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাঙালিদের ইফতার

আপডেট: ০৮:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ এপ্রিল ২০২৩
Print Friendly, PDF & Email

 

মুসলিম উম্মাহর সবচেয়ে মহিমান্বিত মাস হলো ‘রমজান’ মাস। শেষ হলো রহমতের ১০ দিন। শুরু হলো মাগফেরাতের ১০ দিন। আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় বিশ্বের সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমান নিজেদের পবিত্র রেখে পুরো মাস সিয়াম সাধনা করেন। মালয়েশিয়ায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরাও সারাদিন কঠিন কাজ করার পরও রোজা রাখছেন। সিয়াম পালন করার পর প্রবাসীরা হোটেল রেস্তোরাঁয়, কাজের সাইডে বা বাসায় বাঙালিয়ানা আতিথিয়েতায় ইফতারের আয়োজন করছেন।

ইফতারের সময় বাংলাদেশিরা যারা যেখানেই থাকেন-কাজ করেন, সেখানেই বিভিন্ন প্রকারের হাতে বানানো পিঠা, হালুয়া, সাদা ভাত, বিরিয়ানি, ছোলা, মুড়ি, পেঁয়াজু, বেগুনি, মরিচা, আলুচপ, জিলাপি, হালিম, খেঁজুর, আম, তরমুজ, কলা, পেপে, আপেল, আঙ্গুর, অরেঞ্জ ও মালয়েশিয়ানসহ বিবিধ খাবার দিয়ে একসঙ্গে ইফতার করেন। প্রবাস জীবনের ইফতারকে ঘিরে রয়েছে তাদের অনেক সুখ-দুঃখের কথা।

প্রবাসী মো. আমির হোসেন বলেন, “সত্যিই প্রবাস জীবনে এটিই ছিল অনেক আনন্দের ইফতার। দুইজন প্রবাসী বাংলাদেশি বন্ধুকে নিয়ে কাজের ফাকেঁ একসঙ্গে ইফতার করলাম। তবে এই আনন্দের মাঝেও দেশে থাকা পরিবারের সবাইকে অনেক মিস করছি। তাদের সঙ্গে মজা করে ইফতার করার যে সুখ, তা কোনোদিনও প্রবাস জীবনে হবে না।”

আমির হোসেন বলেন, “পবিত্র মাসে রোজা পালনের কিছু লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য রয়েছে। এগুলো হলো আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন, তাকওয়া অর্জন, জান্নাতের আশা, পাপ থেকে দূরে থাকা, আল্লাহর সঙ্গে গভীর সম্পর্ক স্থাপন করা, গুনাহ থেকে মার্জনা লাভ করা, জ্ঞান অর্জন, বিনয় ও নম্রতা শিক্ষা, আত্মিক শক্তি বৃদ্ধির ওপরে আধ্যাত্মিকতাকে প্রাধান্য দেয়া, আধ্যাত্মিক শক্তিকে বৃদ্ধি করা, সৎকাজে অগ্রগামী হওয়া, সৎকাজে নিজেকে অভ্যস্ত করে তোলা, সততা অর্জন, আকাঙ্ক্ষা ও লোভ-লালসা কমানো, নিজেকে অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখা এবং অপ্রয়োজনীয় ও অশলীল কর্মকান্ড ও কথা থেকে বিরত থাকা। আর এসব লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে আমাদেরকে অবশ্যই সব ধরনের বদ অভ্যাস, নেশা বাদ দিতে হবে। রমজানে যেহেতু রোজাদার ব্যক্তিগণ নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলেন, তাই তাদের পক্ষে এসব খারাপ কিছু বাদ দেয়া সহজ।”

রবিবার (২ এপ্রিল)  ইফতারের আগে কথা হয় কাওসার আহমদ নামে এক প্রবাসীর সঙ্গে। কাওসার বললেন, “ইফতার সামনে নিয়ে বসতেই দেশে থাকা বাবা-মা, ভাই-বোনসহ পরিবারের সবার কথা স্মরণ হয়ে যায়। প্রবাসে রোজার ইফতার করলেও মন পড়ে থাকে দেশে। পরিবারের সবাই কী দিয়ে ইফতার করছেন, দেশে থাকতে ঠিক এসময় বাবা বাইরে থেকে কত কিছু নিয়ে আসতেন, মা অনেক যত্ন করে ইফতার পরিবেশন করতেন, এগুলো মনে পড়ে। এখন প্রবাসে ইফতার নিয়ে বসে খুঁজে বেড়াই তাদের। মা-বাবা, ভাই-বোনকে আমি অনেক মিছ করছি।”

প্রবাসী ইমরান আদ বললেন, “দেশে থাকতে এলাকার তরুণদের নিয়ে ইফতারের আয়োজন করতাম। আজ মনে পড়ে গেল সেই স্মৃতি। প্রবাসে এসে সবাইকে মিস করছি।”