কর্মীদের খরচ কমানো এবং রিক্রুটিং এজেন্সির সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হল মালয়েশিয়ার সাথে শ্রমবাজার সংক্রান্ত যৌথ ওয়াকিং গ্রুপের বৈঠক তবে বাংলাদেশে থেকে নিরাপত্তা কর্মী ও গৃহকর্মী নেয়ার বিষয়ে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে
সোমবার ( ২০ মার্চ) বাংলাদেশ- মালয়েশিয়ার মধ্যে শ্রমবাজার ইস্যুতে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের (জেডব্লিউজি) বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় ভার্চুয়াল মাধ্যমে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন
বৈঠক শেষে প্রবাস বার্তাকে ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন জানান, “সমঝোতা স্মারক অনুযায়ি কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে খরচ দেয়ার কথা তাদের নিয়োগদাতাদের কিন্তু তারা এই খরচ দিচ্ছে না এ বিষয়ে আলোচনা হলেও, কোন সিদ্ধান্ত হয়নি”

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, “বাংলাদেশের অনলাইন পদ্ধতি (আমি প্রবাসী) যুক্ত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে তারা আগেও এ বিষয়ে একমত ছিল ১৫ এপ্রিলের মধ্যে অনলাইন যুক্ত করা হবে বলে তারা জানিয়েছেন ডাটাব্যাংক থেকে কর্মী নিয়োগ সম্ভব হলে খরচ নিয়ন্ত্রণে আনা যেত এখনো যেহেতু সেটা সম্ভব হয়নি, তাই পদ্ধতি ঠিক করা এবং তা বাস্তবায়ন করার বিষয়ে আজকে বেশি আলোচনা হয়েছে”
এক প্রশ্নের জবাবে ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন জানান, “রিক্রুটিং এজেন্সির সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে বৈঠকে কোন এজেন্ডা ছিল না এবং বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কোন প্রস্তাবনা ছিল না তারা রিক্রুটিং এজেন্সির হালনাগাদ তালিকা চেয়েছে যদিও আমরা আগে একটি তালিকা দিয়েছিলাম নতুন করে তালিকা কেন চাওয়া হয়েছে তা আমরা জানি না”
সিনিয়র সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন জানান, “বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যে সংখ্যক রিক্রুটিং এজেন্সি তারা অনুমোদন দিয়েছে সেগুলো যেনো সমান সুযোগ পায় বর্তমানে যে স্বয়ংক্রিয় বন্টন ব্যবস্থা আছে, সেখানে যেনো সবাই সমান সংখ্যক কর্মী পাঠানোর সুযোগ পায়, সেই বিষয়ে গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে”
ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন জানিয়েছেন, মালয়েশিয়া সরকার তাদের দেশের নিয়োগদাতাদের জন্য নতুন করে চাহিদাপত্র বা কোটা অনুমোদন দেয়া স্থগিত করেছে এতে করে বাংলাদেশ থেকে কর্মী যাওয়া বন্ধ হবে না আগে থেকে অনুমোদন পাওয়া কোটায় কর্মী যাচ্ছে সিনিয়র সচিব জানান, এখন পর্যন্ত আড়াই লাখের মতো কর্মীর চাহিদা তাদের কাছে এসেছে
অন্যদিকে, রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকরা জানিয়েছেন, ১৭ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য ৩ লাখ ১৭ হাজার কোটা অনুমোদন দিয়েছে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় এতে করে মালয়েশিয়ার নিয়োগদাতারা বাংলাদেশ থেকে ৩ লাখ ১৭ হাজার কর্মী নিয়োগ দিতে পারবেন বা নিয়োগ দেয়ার অনুমোদন পেয়েছেন। আর গেল বছরের ৮ আগস্ট থেকে চলতি বছরের ১৭ মার্চ পর্যন্ত ১ লাখ ১০ হাজারের বেশি কর্মী মালয়েশিয়ায় পৌঁছেছেন ।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ ছিল বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় কর্মী যাওয়া। দীর্ঘ দেনদরবার ও নানা অনিশ্চয়তার পর ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর কর্মী নিয়োগে মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশ একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। এরপর ২০২২ সালের ২ জুন মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী এম সারাভানান এর নেতৃত্বে ঢাকায় দু’দেশের বৈঠকে কারিগরি বিষয়সহ অমীমাংসিত ইস্যুগুলোর সমাধান হয়। শ্রমবাজার খোলার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন দুই মন্ত্রী। নতুন সমঝোতা স্মারক অনুযায়ি ২০২২ সালের ৮ আগস্ট থেকে কর্মী যাওয়া শুরু হয় মালয়েশিয়ায়।
শুরুতে ২৫ রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়ার ঘোষণা দেয় মালয়েশিয়া সরকার। এরপর দুই দফায় আরো ৭৫টি রিক্রুটিং এজেন্সি যুক্ত করে মালয়েশিয়া সরকার। এখন বাংলাদেশের মোট ১০০ রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী নিচ্ছে মালয়েশিয়া সরকার।