মালয়েশিয়ায় বিদেশি কর্মী নিয়োগের কোটা আবেদনের অনুমোদন স্থগিত করেছে দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়। বিদেশি কর্মী নিয়োগ দিতে অনুমোদনের জন্য দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ে নিয়োগদাতাদের আবেদন করতে হয় সেই চাহিদাপত্র বা কোটা অনুমোদন পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত স্থগিত থাকবে তবে আগে থেকে অনুমোদন পাওয়া চাহিদাপত্রে বিদেশি কর্মী নিয়োগ দেয়ার সকল কার্যক্রম চলমান রয়েছে
শনিবার ( ১৮ মার্চ) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী ভি শিবকুমার। দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রী বিবৃতিতে বলেছেন, ফরেন ওয়ার্কার এমপ্লয়মেন্ট রিল্যাক্সেশন প্ল্যানে (পিকেপিপিএ) বিদেশি কর্মীদের জন্য কোটার আবেদন ও অনুমোদন আজ থেকে অর্থাৎ ১৮ মার্চ থেকে পরবর্তীতে তারিখ ঘোষণা না করা পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) পর্যন্ত বিভিন্ন সেক্টর থেকে বিদেশী কর্মীদের জন্য মোট ৯৯৫,৩৯৬টি কর্মসংস্থান কোটা মন্ত্রণালয় অনুমোদন করার পরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফরেন ওয়ার্কার এমপ্লয়মেন্ট রিল্যাক্সেশন প্ল্যানের (পিকেপিপিএ) মাধ্যমে উৎপাদন, নির্মাণ, বৃক্ষরোপণ, কৃষি এবং পরিষেবা খাতে কোটা অনুমোদনের সংখ্যা বিবেচনায় নেয়া হয়। এখন পর্যন্ত বিদেশি শ্রমিকের জন্য যে সংখ্যক কোটা অনুমোদন দেয়া হয়েছে, এর ফলে গুরুত্বপূর্ণ খাতসহ শিল্পকারখানায় এসব কর্মীদের দিয়ে শ্রম চাহিদা মেটানো সক্ষম বলে আশা করছেন মানবসম্পদ মন্ত্রী।
এছাড়াও, যে সংখ্যক কোটার অনুমোদন দেয়া হয়েছে, নিয়োগকর্তারা যাতে সেই কর্মী দ্রুত আনতে পারেন তা নিশ্চিত করায় গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, “মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত কোটার সংখ্যার তুলনায় বিদেশি কর্মীর প্রবেশের সংখ্যা এখনও কম।”
অন্যদিকে, ১৭ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য ৩ লাখ ১৭ হাজার কোটা অনুমোদন দিয়েছে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় এতে করে মালয়েশিয়ার নিয়োগদাতারা বাংলাদেশ থেকে ৩ লাখ ১৭ হাজার কর্মী নিয়োগ দিতে পারবেন বা নিয়োগ দেয়ার অনুমোদন পেয়েছেন। আর গেল বছরের ৮ আগস্ট থেকে চলতি বছরের ১৭ মার্চ পর্যন্ত ১ লাখ ১০ হাজারের বেশি কর্মী মালয়েশিয়ায় পৌঁছেছেন ।
এছাড়া মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের শ্রম-কল্যাণ উইং থেকে প্রায় আড়াই লাখ কর্মী নিয়োগের চাহিদাপত্রে সত্যায়ন দেয়া হয়েছে। আর জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো-বিএমইটি থেকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার কর্মীকে। মালয়েশিয়াগামী কর্মীদের ভিসা ইস্যুতে সহযোগিতা করা প্রতিষ্ঠান এমইএফসি থেকে ই-ভিসা ইস্যু করা হয়েছিল ১ লাখ ৩৫ হাজার।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ ছিল বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় কর্মী যাওয়া। দীর্ঘ দেনদরবার ও নানা অনিশ্চয়তার পর ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর কর্মী নিয়োগে মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশ একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। এরপর ২০২২ সালের ২ জুন মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী এম সারাভানান এর নেতৃত্বে ঢাকায় দু’দেশের বৈঠকে কারিগরি বিষয়সহ অমীমাংসিত ইস্যুগুলোর সমাধান হয়। শ্রমবাজার খোলার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন দুই মন্ত্রী। শুরুতে ২৫ রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়ার ঘোষণা দেয় মালয়েশিয়া সরকার। এরপর দুই দফায় আরো ৭৫টি রিক্রুটিং এজেন্সি যুক্ত করে মালয়েশিয়া সরকার। এখন বাংলাদেশের মোট ১০০ রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী নিচ্ছে মালয়েশিয়া সরকার। নতুন সমঝোতা স্মারক অনুযায়ি ২০২২ সালের ৮ আগস্ট থেকে কর্মী যাওয়া শুরু হয় মালয়েশিয়ায়।