প্রবাসী কর্মীদের আর্থসামাজিকভাবে লাভবান করতে বাধ্যতামুলক বীমার মেয়াদ ২ বছর থেকে বাড়িয়ে ৫ বছর করা হয়েছে। ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড ও জীবন বীমা কর্পোরেশনের মধ্যে এ বিষয়ে চুক্তি সই হয়েছে।
রবিবার (১২ মার্চ) বিকেলে প্রবাসী কল্যাণ ভবনের বিজয় ৭১ অডিটরিয়ামে পাঁচ বছর মেয়াদি “প্রবাসী কর্মী বীমা” শীর্ষক অনুষ্ঠানে এই চুক্তি সই হয়। ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক মোঃ হামিদুর রহমান ও জীবন বীমা কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মিজানুল হক চৌধুরী নিজ নিজ পক্ষে চুক্তি সই করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, “সরকার প্রবাসী কর্মীদের আর্থসামাজিক ভাবে লাভবান করার জন্য বাধ্যতামূলক বীমা চালু করেছে। বীমা সুবিধা ২ লাখ টাকা থেকে ১০ লাখ টাকায় এবং মেয়াদ ২ বছর থেকে ৫ বছরে উন্নীত হয়েছে। দিনে দিনে এই বীমার সুবিধা বাড়ানো হবে।”
তিনি বলেন, “বাধ্যতামূলক এই বীমার পাশাপাশি প্রবাসী কর্মীদের কল্যাণে আরও সুবিধাযুক্ত অন্যান্য বীমা চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে। বীমার সুবিধা যেন প্রবাসী কর্মীরা কাজে লাগাতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।”
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেনজির আহমেদ এমপি বলেন, “বীমার আওতায় আসলে প্রবাসী কর্মীদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা তৈরি হচ্ছে।” তিনি আরো বলেন, যেসব কর্মী বর্তমানে বিদেশে অবস্থান করছেন তারা সবাই যদি এই বীমার আওতায় আসতে পারে তাহলে তা কর্মীদের জন্য আরো ভালো হবে।”
বীমা চুক্তি সই অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বলেন, “প্রবাসী কর্মীরা যাতে ঝুঁকিমুক্তভাবে বিদেশে তাদের কাজ করতে পারেন তা নিশ্চিত করাই আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার। একইসঙ্গে তাদের ঝুঁকির কথা বিবেচনা করেই প্রবাসী বীমা চালু করা হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “প্রবাসী কর্মীদের জন্য বীমা চালুর উদ্যোগটি সারাবিশ্বে প্রসংশিত হয়েছে। নতুন নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে কিভাবে প্রবাসী কর্মী ও তাদের পরিবারের কল্যাণ নিশ্চিত করা যায় সে বিষয়ে কাজ করার জন্য বায়রা’সহ সকল অংশীজনের প্রতি আহবান জানান প্রবাসী কল্যাণ সচিব।”
অনুষ্ঠানে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) এর মহাপরিচালক শহিদুল আলম এনডিসি বলেন, “বীমা কর্পোরেশনের পাশাপাশি যদি রিক্রুটিং এজেন্সির পক্ষ থেকে কর্মীদের জন্য ইন্সুরেন্স এর ব্যবস্থা করা হয় তাহলে কর্মীরা কয়েক দিক থেকে উপকৃত হবেন।”
তিনি আরো বলেন, “স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে স্মার্ট কর্মীর প্রয়োজন। আর স্মার্ট কর্মী তৈরীর লক্ষ্যে “প্রবাসী কর্মী বীমা” হতে জীবন বীমা কর্পোরেশনের লভ্যাংশের ৫০ শতাংশ ওয়েজে আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডে ফিড়িয়ে দেয়া ফান্ড থেকে কর্মীদের জন্য বিনিয়োগ করা হবে। এতে দেশের যেমন সাফল্য আসবে তেমনি কর্মীরাও উপকৃত হবেন।
ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড-এর মহাপরিচালক মোঃ হামিদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, জীবন বীমা কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মিজানুল হক চৌধুরী, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোঃ জয়নাল বারী।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েসেল)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মল্লিক আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সীজ (বায়রা)- এর সভাপতি মোহাম্মদ আবুল বাশার’সহ মন্ত্রনালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তারা।