মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে কথিত ২৫ রিক্রুটিং এজেন্সির সিন্ডিকেটের সাথে নিজের ও ছেলের সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি নাকচ করেছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন। তিনি বলেন, উদ্দেশ্যমূলকভাবে তার পরিবারকে জড়িয়ে বক্তব্য দিয়েছে রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকদের কয়েকজন। তাদের ওই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছেন প্রবাসী কল্যাণ সচিব।
শনিবার ( ১৮ জুন ) মালয়েশিয়া শ্রমবাজার ইস্যুতে রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকদের একাংশের সংবাদ সম্মেলনে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিবকে জড়িয়ে বক্তব্য দেয়া হয়। সেখানে অভিযোগ করা হয় মালয়েশিয়া শ্রমবাজারে কথিত ২৫ এজেন্সির সিন্ডিকেটে সচিবের ছেলের প্রতিষ্ঠানের নাম রয়েছে। একইসাথে অভিযোগ করা হয়, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ও সচিব এবং এক এগারোর খলনায়করা সিন্ডিকেটের সাথে যুক্ত। অভিযোগের পাশাপাশি সচিবের পদত্যাগও দাবি করেন রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক টিপু সুলতান। তার অভিযোগের সমর্থনে বক্তব্য দেন বায়রার সাবেক সভাপতি নুর আলী।
তাদের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন। লিখিত বিবৃতিতে তিনি জানান, “গতকাল ( শনিবার, ১৮ জুন ) একটি সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ইম্পেরিয়াল রিসোর্স নামের একটি রিক্রুটিং এজেন্সি নাকি মালয়েশিয়ার কথিত ২৫ টি রিক্রুটিং এজেন্সির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত আছে। এবং অভিযোগ করা হয়েছে আমার ছেলে রাফিদ আহমেদ সালেহীন নাকি এই এজেন্সির একজন কর্মকর্তা ( সিইও)। এই সূত্রে কথিত সিন্ডিকেট করা বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে আমার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।”
প্রবাসী কল্যাণ সচিব বলেন, “এ বিষয়ে প্রকৃত তথ্য হচ্ছে আমার ছেলে রাফিদ আহমেদ সালেহীন (২৮) এসকিউ গ্রুপে সাধারণ একজন কর্মকর্তা হিসেবে কিছুদিন চাকরি করেছে। এই গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ইম্পেরিয়াল রিসোর্স। বছর দেড়েক আগে থেকে সে এসকিউ গ্রুপের চাকরি থেকে আইওএম এর একজন কন্সাল্ট্যান্ট হিসেবে নিয়োজিত আছে। সে ইমপেরিয়াল রিসোর্স এর সিইও হওয়া তো দূরের কথা, এই প্রতিষ্ঠানের সাথে কোনোভাবে যুক্ত নয়। আমার ছেলের নিয়োগকারী গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠানের কোনো কর্মকাণ্ডের সাথে দূরতম সম্পর্ক কল্পনা করে, কোনো ধরণের তথ্যপ্রমাণ ছাড়া, নিছক অনুমানের ভিত্তিতে বা অন্য কোনো হীন উদ্দেশ্যে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করা একজন সচিবের ভূমিকাকে কোনো সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নবিদ্ধ করা খুবই অনৈতিক ও দুঃখজনক।”
রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকদের একাংশের ঐ বক্তব্য বিষয়ে সচিব আরো বলেন, “অপরিপক্ক, এবং সম্ভবতঃ হীন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এই প্রচেষ্টায় আমি অত্যন্ত বিব্রত ও অপমানিত বোধ করছি বিধায় আমি তা দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রত্যাখ্যান করছি।”
শনিবারের ঐ সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বায়রার সাবেক সভাপতি আবুল বাশার, সাবেক মহাসচিব শামিম আহমেদ চৌধুরি নোমান, সাবেক অর্থ সচিব ফখরুল ইসলামসহ অন্যরা।
এদিকে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে লাইসেন্সপ্রাপ্ত একজন ব্যবসায়ী কোন তথ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে মন্ত্রী ও সচিকে জড়িয়ে গণমাধ্যমের সামনে এমন অভিযোগ করেছেন তার ব্যাখ্যা চাওয়া হতে পারে টিপু সুলতানের কাছে। এ বিষয়ে আইনগত দিক পর্যালোচনা করে শিগগিরই ব্যবস্থা নেয়া হবে।