ঢাকা , শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৬ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :

সীতাকুন্ডে কন্টেইনার ডিপোতে অগ্নিকান্ডে নিহত ৪১, ঘটনা তদন্তে ৩ কমিটি গঠন

Print Friendly, PDF & Email

 

চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে সোনাইছড়ি ইউনিয়নে বিএম কনটেইনার ডিপোতে স্মরণকালের ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের ৮ কর্মীসহ এ পর্যন্ত ৪১ জন নিহত হয়েছে।

রবিবার (৫ জুন) ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক আনিসুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করছেন। তিনি জানান, ফায়ার সার্ভিসের ২৮ জন হতাহত হয়েছে। এর মধ্যে ৮জন মৃত্যুবরণ করেছেন। নিহতদের মধ্যে ৩ জনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া আহত ১৫ জনকে সিএমএইচে ভর্তি করা হয়েছে। বিস্ফোরণের ঘটনায় এখনও ৫ জন ফায়ার সার্ভিসের কর্মী নিখোঁজ রয়েছেন।

তিনি আরো জানান, এই ঘটনায় চার শতাধিক দগ্ধ ও আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে শ্রমিক, পুলিশ সদস্য ও ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা রয়েছেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। অনেককে বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়।

শনিবার (৪ জুন ) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে সীতাকুন্ডস্থ বিএম কন্টেইনার ডিপোতে একটি কেমিক্যাল ভর্তি কন্টেইনার থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। এরপরই বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এখনো সেটি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট। ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর আড়াইশ সদস্য কন্টেইনার ডিপোটিতে অগ্নিনির্বাপনে তাদের মিশন শুরু করেছেন।

এদিকে বিএম ডিপোর ঘটনা তদন্তে টার্মিনাল ম্যানেজারকে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। এই কমিটিকে ৩ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনায় তিন সদস্যের অপর একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।

অধিদপ্তরের সহকারী মহিপরিদর্শক শিপন চৌধুরীকে প্রধান করে গঠিত কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে শ্রম পরিদর্শক (স্বাস্থ্য) শুভংকর দত্তকে। আরেক সদস্য হলেন শ্রম পরিদর্শক (নিরাপত্তা) মো. শামীম হোসেন। কমিটিকে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে সরেজমিনে পরিদর্শনপূর্বক তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এদিকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগেও একটি তদন্ত কমিটি গঠন হয়।

অন্যদিকে স্থানীয়রা জানান, আগুন লাগার অল্পক্ষণ পরই বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে বিএম ডিপো এলাকার চারপাশে পাঁচ কিলোমিটার প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, প্রায় ২৬ একর আয়তনের বিএম কন্টেইনার ডিপোতে এখনো আগুন জ¦লছে। ফায়ার সার্ভিসের ২৫ টি ইউনিট সেখানে কাজ করছে। ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক জানিয়েছেন, কন্টেইনারে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড থাকার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না।

সীতাকুন্ডে কন্টেইনার বিস্ফোরণের পরপরই আহতদের আর্তনাদে এলাকায় বিভীষিকাময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। প্রথমে স্থানীয়রা এবং কুমিরা ফায়ার সার্ভিস অগ্নিনির্বাপনের চেষ্টা চালায়। অবস্থা বেসামাল দেখে চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা থেকেও ফায়ার সার্ভিস ইউনিটকে সীতাকুণ্ডে নিয়ে আসা হয়। রাত একটার দিকে ফায়ার সার্ভিসের পানি সংকট সৃষ্টি হয়। পরে বিভিন্নভাবে পানি যোগার করে তারা আবার আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। রাত সাড়ে তিনটার দিকে একের পর এক কন্টেইনার বিস্ফোরণ শুরু হলে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা নিরাপদ স্থানে সরে যান। ভোর থেকে তারা আবার বিভিন্ন কন্টেইনার ও কন্টেইনারবাহী লরিতে লাগা আগুন নির্বাপনে কাজ শুরু করেন।

সুত্রঃ বাসস।

Tag :
জনপ্রিয়

মালয়েশিয়ায় মৃত্যুদন্ড থেকে রেহাই পেলেন বাংলাদেশি

সীতাকুন্ডে কন্টেইনার ডিপোতে অগ্নিকান্ডে নিহত ৪১, ঘটনা তদন্তে ৩ কমিটি গঠন

আপডেট: ০৪:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ জুন ২০২২
Print Friendly, PDF & Email

 

চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে সোনাইছড়ি ইউনিয়নে বিএম কনটেইনার ডিপোতে স্মরণকালের ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের ৮ কর্মীসহ এ পর্যন্ত ৪১ জন নিহত হয়েছে।

রবিবার (৫ জুন) ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক আনিসুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করছেন। তিনি জানান, ফায়ার সার্ভিসের ২৮ জন হতাহত হয়েছে। এর মধ্যে ৮জন মৃত্যুবরণ করেছেন। নিহতদের মধ্যে ৩ জনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া আহত ১৫ জনকে সিএমএইচে ভর্তি করা হয়েছে। বিস্ফোরণের ঘটনায় এখনও ৫ জন ফায়ার সার্ভিসের কর্মী নিখোঁজ রয়েছেন।

তিনি আরো জানান, এই ঘটনায় চার শতাধিক দগ্ধ ও আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে শ্রমিক, পুলিশ সদস্য ও ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা রয়েছেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। অনেককে বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়।

শনিবার (৪ জুন ) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে সীতাকুন্ডস্থ বিএম কন্টেইনার ডিপোতে একটি কেমিক্যাল ভর্তি কন্টেইনার থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। এরপরই বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এখনো সেটি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট। ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর আড়াইশ সদস্য কন্টেইনার ডিপোটিতে অগ্নিনির্বাপনে তাদের মিশন শুরু করেছেন।

এদিকে বিএম ডিপোর ঘটনা তদন্তে টার্মিনাল ম্যানেজারকে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। এই কমিটিকে ৩ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনায় তিন সদস্যের অপর একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।

অধিদপ্তরের সহকারী মহিপরিদর্শক শিপন চৌধুরীকে প্রধান করে গঠিত কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে শ্রম পরিদর্শক (স্বাস্থ্য) শুভংকর দত্তকে। আরেক সদস্য হলেন শ্রম পরিদর্শক (নিরাপত্তা) মো. শামীম হোসেন। কমিটিকে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে সরেজমিনে পরিদর্শনপূর্বক তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এদিকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগেও একটি তদন্ত কমিটি গঠন হয়।

অন্যদিকে স্থানীয়রা জানান, আগুন লাগার অল্পক্ষণ পরই বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে বিএম ডিপো এলাকার চারপাশে পাঁচ কিলোমিটার প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, প্রায় ২৬ একর আয়তনের বিএম কন্টেইনার ডিপোতে এখনো আগুন জ¦লছে। ফায়ার সার্ভিসের ২৫ টি ইউনিট সেখানে কাজ করছে। ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক জানিয়েছেন, কন্টেইনারে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড থাকার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না।

সীতাকুন্ডে কন্টেইনার বিস্ফোরণের পরপরই আহতদের আর্তনাদে এলাকায় বিভীষিকাময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। প্রথমে স্থানীয়রা এবং কুমিরা ফায়ার সার্ভিস অগ্নিনির্বাপনের চেষ্টা চালায়। অবস্থা বেসামাল দেখে চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা থেকেও ফায়ার সার্ভিস ইউনিটকে সীতাকুণ্ডে নিয়ে আসা হয়। রাত একটার দিকে ফায়ার সার্ভিসের পানি সংকট সৃষ্টি হয়। পরে বিভিন্নভাবে পানি যোগার করে তারা আবার আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। রাত সাড়ে তিনটার দিকে একের পর এক কন্টেইনার বিস্ফোরণ শুরু হলে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা নিরাপদ স্থানে সরে যান। ভোর থেকে তারা আবার বিভিন্ন কন্টেইনার ও কন্টেইনারবাহী লরিতে লাগা আগুন নির্বাপনে কাজ শুরু করেন।

সুত্রঃ বাসস।