মহামারি করোনার প্রভাবে গেল দুই বছরের ঈদ আনন্দ ঘরে বসে কাটাতে হয়েছে মালয়েশিয়ার নাগরিকসহ প্রবাসীদের। করতে হয়েছে উৎসববিহীন ঈদ। এবার রহমত মাগফেরাত ও নাজাতের মাস রমজান শেষ হতে চলেছে। শেষ মূহুর্তে পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঈদের কেনা কাটায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন সবাই। ঈদের আগেরই যেন ঈদ আনন্দে মেতে উঠেছেন সবাই।
দেশটির বিপণিবিতানে ক্রেতাদের পদচারণায় প্রাণ ফিরে পেয়েছে দেশটির এবারের ঈদবাজার। যদিও মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের অনেক বাসিন্দা আসন্ন ঈদ উদযাপনের জন্য তাদের নিজ শহরে ফিরে যেতে শুরু করেছেন। তবে এমন কিছু ব্যক্তি রয়েছেন যারা এখনও রাজধানীতে রয়েছেন এবং শেষ মুহুর্তের কেনাকাটা করতে ব্যস্ত তারা।
দেশটির বেশ কয়েকটি শপিংমল ঘুরে দেখা গেছে, সবখানেই ক্রেতাদের ভিড়ে পরিপূর্ণ ছিল এবং রোজা ভাঙার পরে ভিড় আরও বেড়ে যায়। কুয়ালালামপুরের শপিংমল সগোতে অবস্থিত বাথ অ্যান্ড বডি ওয়ার্কস আউটলেটের ২৫ বছর বয়সী অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার অ্যামি আরিফিন বলেন, রমজান মাস জুড়ে ক্রেতাদের অন্তহীন স্রোত মলে উৎসবের বাতাস বয়ে এনেছে।
মজলিস আমানাহ রাকয়াত (মারা) বিল্ডিংয়ের একটি বাজু মেলায়ুর দোকানের একজন কর্মী মুহদ নাসরাত মাহির, ১৭, অ্যামির সাথে একমত হয়েছেন, শেয়ার করেছেন যে গ্রাহকরা সাধারণত ৪ টার পর থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত আসতে শুরু করে। মাহির বলেন, প্রতিদিন অনেক গ্রাহক আছে, শুধু শেষ মুহুর্তে ঈদের বাজারের ক্রেতাই নয়, আগেও অনেক লোক ছিল।
এদিকে জালান তার, রাতের বাজারে, ক্রেতা আউনি সাফিয়াহ, ১৮, বলেছেন, তিনি কেলান্তানে বাড়ি ফেরার তিন দিন আগে শপিং মলে তার হারি রায়ার কেনাকাটা করছেন। সাফিয়া বলছেন, আলহামদৃলিল্লাহ এবারের প্রস্তুতি দুই বছরের আগের তুলনায় অনেক বেশি উৎসবমুখর এবং আজ আমি আমার পরিবারের সাথে রায়ার প্রয়োজনীয় জিনিস যেমন টুডুং, জুতা এবং অন্যান্য আইটেম কেনার জন্য সময় কাটাচ্ছি। এখন পর্যন্ত, এমন অনেক দোকান আছে যেখানে কম দামে লোভনীয় প্রচার এবং ডিসকাউন্ট রয়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ বলে জানালেন সাফিয়া।
জালান তারায় রাতের বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী, কামারুদ্দিন হুসেন, ৫৫, বলেন, তিনি আজ থেকে প্রচার এবং ডিসকাউন্ট শুরু করেছেন। “যেহেতু আমি রমজানের শুরুতে এখানে বিক্রি শুরু করেছি, গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া খুবই উত্সাহজনক এবং এখন রায়ার (ঈদের) আগে মাত্র তিন দিন বাকি আছে, আমরা বিক্রয় বাড়ানোর জন্য বেশ কয়েকটি আকর্ষণীয় মূল্য হ্রাস দিয়েছি। কামারুদ্দিন বলেন, আমি সত্যিই আশা করি যে শেষ মুহূর্তে আরও বেশি গ্রাহক উপস্থিত হবে কারণ তারা এই মাসের শেষে ব্যবসায়ীদের দ্বারা প্রদত্ত প্রচার এবং ডিসকাউন্টের সুবিধা নিতে চায়।
এদিকে দেশটিতে বাংলাদেশি মালিকানাধীন দোকানে প্রবাসীদের পাশাপাশি স্থানীয়রাও ভিড় করছেন তাদের পছন্দের পোশাক কিনতে। কেনাকাটার জন্য প্রবাসীরা ভিড় করছেন কুয়ালালামপুরের বড় বড় ফ্যাশন হাউসেও। দেশের মতো এখানেও প্রবাসী বাংলাদেশিরা তাদের পছন্দের কেনাকাটার জন্য ছুটছেন এক বিপণিবিতান থেকে আরেক বিপণিবিতানে। বাংলাদেশি পোশাক এবার নজর কাড়ছে স্থানীয়দের মাঝেও।
বাংলাদেশি মালিকানাধীন দোকানগুলোতে দেখা যাচ্ছে ক্রেতাদের ভিড়। বিদেশে থেকেও পছন্দের দেশীয় পোশাক কিনতে পেরে খুশি প্রবাসীরা। এবার অনেকেই দেশে থাকা তাদের পরিবার ও স্বজনদের জন্য পোশাক কিনছেন। করোনাকালে দুই বছরেরও বেশি সময় বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞার কারণে ক্রেতা সমাগত অনেক কম হলেও এবার পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক। তাই আগের বছরের ক্ষতি কাটিয়ে উঠার আশা বিক্রেতাদের।