মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমান থেকে ঝড়ের কবলে পড়ে পাকিস্তানে গিয়ে আটক আট বাংলাদেশি দীর্ঘ দেড় বছর পর অবশেষে দেশে ফিরেছেন। বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে এমিরেটস এয়ারলাইনসের ইকে-৫৮৪ বিমান যোগে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌছায়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের সহায়তার ব্র্যাকের পক্ষ থেকে বিমানবন্দরে তাদের খাবার পানিসহ জরুরী সেবা দেয়া হয়। ব্র্যাকের সাইকোসোসাল কাউন্সিলর এ সময় তাদের সঙ্গে কথা বলে তাদের মনোসামাজিক সেবা দেন। পরে তাদের বাড়ি পৌঁছানোর উদ্যোগ নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচি প্রধান শরিফুল হাসান।
ফেরত আসা এই বাংলাদেশিদের সবার বাড়ি নোয়াখালী। তারা হলেন- মোঃ শহিদ, মোঃ ইউসুফ, মোহাম্মদ খান, মোঃ শরিফ, মোঃ শাহরাজ, মোঃ নবির, আবুল কাশেম ও দেলোয়ার। দীর্ঘদিন পরে দেশে ফেরত আসায় তারা স্বস্তি প্রকাশ করেন।
ব্র্যাক বলছে, এই আট বাংলাদেশি কর্মী বৈধভাবে ওমানের একটি ফিশিং বোটে কর্মরত ছিলেন। ২০১৯ সালের মে মাসে ওমান সংলগ্ন আরব সাগরে মাছ ধরার সময় তাদের ফিশিং বোট স্রোতের টানে পাকিস্তানের জলসীমায় ঢুকে পড়ে। এরপর পাকিস্তানী কোস্ট গার্ড তাদের আটক করে। সম্প্রতি তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রলায় উদ্যোগ নেয়। করাচীর বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশন সিন্ধ প্রদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং মালির কারা কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে তাদের ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন এবং বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করে। আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় সরকারি খরচে বিমান ভাড়াসহ আনুষঙ্গিক ব্যয়ের অনুমোদন দেয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরপর তাদের ফিরিয়ে আনা হয়।
ওমান থেকে যাওয়ার পথে ঝড়ের কবলে পড়ে ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের হাতে আটক পাঁচ বাংলাদেশি মুক্তি পেলেও এখনো দেশে ফিরতে পারেননি।
আটক এই বাংলাদেশিদের মধ্যে আলাউদ্দিন ও রহিম নামে দুই বাংলাদেশি ব্র্যাককে জানিয়েছেন, করোনা শুরুর আগে ফেব্রুয়ারি মাসে ওমান থেকে সৌদি আরব যাওয়ার পথে ঝড়রে কবলে পড়ে ৩টি জাহাজের ২০ জন নাবিক ইয়েমেনের উপকূলে থামলে হুতি বিদ্রোহীরা তাঁদের বন্দী করেন। দীর্ঘ যোগাযোগের পর ২৮ নভেম্বর তারা হুতি বিদ্রোহীদের হাত থেকে মুক্তি পান। তাদের সঙ্গে মুক্তি পাওয়া ভারতীয় ১৪ জন নাগরিক মুক্তির পরপরই দেশে চলে গেলেও তারা এখনো যেতে পারেননি। কারণ তাদের ফ্লাইট নিশ্চিত করা হয়নি। তারা দ্রুত দেশে ফেরার আকুতি জানিয়েছেন।
তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ওমান, কুয়েত দূতাবাস এবং জিবুতিতে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের প্রচেষ্টায় তাদরে এডেনে আনা হয়। তাদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার সব উদ্যোগ চলছে।