মালয়েশিয়ার বিভিন্ন কোম্পানি থেকে বাংলাদেশি কর্মীদের সাড়ে ৬ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় করে কর্মীর পরিবারের কাছে পাঠিয়েছে হাইকমিশন। সক্রিয় আইনি সহায়তায় ২০১৮ এবং ২০১৯ সাল পর্যন্ত ৬ কোটি ৫৭ লাখ ৮৯ হাজার ৭৮২ টাকার ক্ষতিপূরণ আদায় করা হয়েছে।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে আদায় করা হয়েছে ২০ লাখ ২৩ হাজার ৬২ টাকা। আরোও ৪৫ টি আবেদনের বকেয়া বীমার টাকা আদায়ের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
৪৫ টি আবেদন ছাড়াও মালয়েশিয়া সরকার কর্তৃক অনুমোদিত বীমা কোম্পানী সোকসোতে ১২ টি আবেদন চলমান রয়েছে। এ ছাড়া পরবর্তী কার্যক্রমের লক্ষ্যে ২৫০০ টি আবেদনের তথ্যাদি প্রেরণের জন্য বাংলাদেশ ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডে পাঠানো হয়েছে বলে মিশনের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
এ দিকে ঢাকা থেকে সঠিক ও সময় মত তথ্যাদি প্রেরণের উপর নির্ভর করে এসব ক্ষতিপূরণ আদায়।
কর্মীদের ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে মালয়েশিয়া সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর, দূতাবাস এবং বাংলাদেশে অবস্থিত পরিবারের উপর নির্ভর।
জানা গেছে, দূতাবাস মালয়েশিয়া সরকারের শ্রম দপ্তর এবং নিয়োগকর্তার নিকট দাবী জানিয়ে পত্র প্রেরণ করে, শ্রম ও সংশ্লিষ্ট অফিস প্রক্রিয়া শুরু করে এবং বাংলাদেশে অবস্থিত ক্ষতিপূরণ প্রত্যাশী ব্যাক্তি বা তার পরিবারের তথ্যাদি প্রেরণের জন্য হাইকমিশনে পত্র দিলে হাইকমিশন তা বাংলাদেশে অবস্থিত ওয়েজ আর্নার্স ওয়েলফেয়ার বোর্ডে প্রেরণ করে। এ পর্যায়ে প্রশাসনিক ধীরগতির নানান অভিযোগ জানিয়েছেন ভূক্ত ভোগীরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কল্যান বোর্ড কাগজ পত্র জেলা জনশক্তি অফিসে প্রেরণ করে পরিবারের তথ্য ও আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আবার ওয়েজ বোর্ডের নিকট প্রেরণ করে। এই কাজটি করার জন্য দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হয়।
জানা গেছে, দুর্ঘটনা, বকেয়া বেতন, মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ আদায় বাবদ দূতাবাস থেকে পাঠানো চেক বাংলাদেশ থেকে প্রত্যাশিত ব্যক্তিদের নিকট হস্তান্তরে সময় শেষ হয়ে যায়। ফলে চেকটি নগদায়নে সমস্যার সৃষ্টি হয়। চেকটি পুনরায় মালয়েশিয়ায় ফেরত পাঠানো হয় এবং নতুন করে মালয়েশিয়ার শ্রম অফিসের মাধ্যমে পেতে অনেক সময় লাগে। অপেক্ষায় থাকে পুরো পরিবার।
এ অবস্থায় ক্ষতিপূরণপ্রত্যাশীরা একের পর এক দেনার মধ্যে থেকে দিনাতিপাত করছেন।
এ বিষয়ে দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর মো: জহিরুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনা, মৃত্যু বা বকেয়া বেতন ও শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ আদায়ে আইনি প্রক্রিয়ায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এ ছাড়া যাদের বৈধ ও কাগজপত্র সঠিক তারাই ক্ষতিপূরণ পাবেন। আর এই ক্ষতিপূরণ আদায়ে দূতাবাস সর্বাত্মক সহযোগিতা করে থাকে।
বাংলাদেশি কর্মীরা ক্ষতিপূরণ পেতে যাতে কোনো হয়রানির শিকার না হয়, তার জন্য সজাগ দৃষ্টি রাখা হয়েছে বলে শ্রম কাউন্সিলর জহিরুল ইসলাম বলেন,মালয়েশিয়ায় সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নতুন বীমার আওতায় বিদেশী কর্মীরা নিবন্ধিত হচ্ছেন।
আগে শুধু স্থানীয় নাগরিকরাই এ সুবিধা পেতেন। এখন থেকে বিদেশি কর্মীরাও এই সুবিধা পাবেন। এটি সফল বাস্তবায়ন হলে কর্মী আজীবন পেনশন পাবে।