বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনা ভাইরাসে অর্থনীতিকে স্থবির করে তুলেছে। পাশাপাশি শ্রম নিয়োগেও বড় ধাক্কা লেগেছে দেশে দেশে। আর এ ধাক্কা থেকে চলছে উওরণের চেষ্টা। বিদেশী কর্মীদের উপর নির্ভরতা কমিয়ে স্থানীয়দের চাকরি দেওয়ার জন্য সরকারকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। মালয়েশিয়ার সামাজিক সুরক্ষা সংস্থার (সোকসো) কর্মসংস্থান বীমা ব্যবস্থার (ইআইএস) পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে দেশব্যাপী ৭৯,৭৩৭ জন শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন। এ সময়ে বিদেশি শ্রম নির্ভরতা কমিয়ে প্রনোদনা প্যাকেজের মাধ্যমে ৪৭ হাজার ৩৩২ জন স্থানীয় কর্মী নিয়োগ দিয়েছে মালয়েশিয়া। গত ১৫ জুন থেকে এ পর্যন্ত পেনজানা প্রকল্পের আওতায় ৭,১৯৬ টি কোম্পানীতে এদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন, দেশটির মানব সম্পদমন্ত্রী দাতুক সেরি এম সারাভানান।
এ দিকে গত মার্চ থেকে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন শ্রমনির্ভর শিল্প প্রতিষ্টানের প্রায় ৪০ হাজারেরও বিদেশী শ্রমিক নিজ নিজ দেশে ফিরে গেছেন। ১১ সেপ্টেম্বর দি মালয়েশিয়ান রিজার্ভে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতুক সেরি হামজাহ জয়নুদ্দিনের উদ্ধৃতি দিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়,গত সপ্তাহে সংসদে সিনেটর দাতুক পল ইগাইয়ের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হামজাহ জয়নুদ্দিন বলেন, ইমিগ্রেশন বিভাগের রেকর্ডে দেখা গেছে, ১ লা মার্চ থেকে ৪০,৯৯৪ জনকে চেকআউট মেমোর মাধ্যমে বিদেশি কর্মীদের তাদের নিজ নিজ দেশে ফিরেছেন। হামজা বলছেন, ইমিগ্রেশন বিভাগ এই বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ১.৭১ মিলিয়ন অস্থায়ী কর্মসংস্থান ভিজিট পাস করেছে। বিভাগটি গত বছর ১.৯ মিলিয়ন পাস ইস্যু করেছিল, তবে মন্ত্রী অনিবন্ধিত কর্মীদের সংখ্যা কত তা নিশ্চিত করেননি।
ইমিগ্রেশন রেগুলেশন ১৯৬৩-এর ১১-এর নিয়ম অনুসারে সকল বিদেশী কর্মীদের মালয়েশিয়ায় অবস্থানকালে অস্থায়ী কর্মসংস্থান ভিজিট পাস করতে হবে। যাদের বৈধ কাগজপত্র নেই তাদের ইমিগ্রেশন আইন ১৯৫৯/৬৩ এর অধীনে অবৈধ বলে বিবেচিত হবে। অনুমোদিত কোটার ভিত্তিতে বিদেশী কর্মীদের উৎ্পাদন, নির্মাণ, বৃক্ষরোপণ, পরিষেবা, কৃষি এবং খনির মতো খাতে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয়। হামজা বলেছেন, মালয়েশিয়ায় অবৈধ বিদেশী শ্রমিকদের তাড়াতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। গত বছর দ্য ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুসারে, মালয়েশিয়ার মোট শ্রমশক্তির প্রায় ১৫.৭ মিলিয়ন বিদেশী কর্মী রয়েছেন। মালয়েশিয়ার নিবন্ধিত বিদেশী কর্মসংখ্যার ৪০% ইন্দোনেশিয়া, তার পরে নেপালি ২২% এবং বাংলাদেশী ১৪% রয়েছেন। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ৭% কেবলমাত্র গৃহকর্মী হিসাবে নিযুক্ত রয়েছে, যদিও বেশিরভাগ লোক প্রাথমিক কাজ বা মেশিন অপারেশন এবং উৎ্পাদন ৩৬%, নির্মাণ ১৯%, বৃক্ষরোপণ ১৫% এবং পরিষেবা ১৪%।